[প্রথমপাতা] |
বিজয় দিবসের
শ্রদ্ধার্ঘ্যঃ প্রয়াত শেখ আহমেদ জালাল এর স্বাধীনতা
যুদ্ধকালীন
তথ্য সংগ্রহশালা
কাজী ইনসানুল হক ।। ডিসেম্বর ১৬, ২০১০ ।।
সাবেক জাপান প্রবাসী মুক্তিযোদ্ধা, বিশিষ্ট কুটনীতিক এবং লেখক শেখ আহমেদ
জালাল তার জীবদ্দশায় শত ব্যাস্ততার মাঝেও প্রতিকূলতা কাটিয়ে আমাদের
স্বাধীনতা যুদ্ধচলাকালীন সময়ে জাপান সহ সারা বিশ্বের মিডিয়ায় যে রিপোর্ট
প্রকাশিত হয়েছিল তার তথ্য, কাটিং ও ক্লিপিং এর সংগ্রহ করেছিলেন এবং তা
সংরক্ষন করে গেছেন। জাপানের প্রায় সব দৈনিক, সাপ্তাহিক ও সাময়িকীতে
মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে জাপানের জনমত, দেশটির তৎকালীন নেতাদের মতামত,
পাকিস্তান দূতাবাসের নিউজ লেটার সহ নানান তথ্যের ভান্ডারটি তার পরিবার
মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরের কাছে হস্তান্তর করেছেন।
মহামূল্যবান এই তথ্য ভান্ডারটি এখন ইন্টারনেটেও পাওয়া যাবে। সাইটটির লিঙ্ক
হলোঃ
www.achives.liberationwarmuseum.org
কর্মময় জীবনের অধিকারী জনাব আহমেদ জালাল উচ্চশিক্ষার্থে জাপানে এসেছিলেন
১৯৬০ সালে। মনবশু স্কলারশীপে তিনি মাইনিং
ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের উপর শিক্ষা শেষে জাপানি ভাষার উপর ডিল্পোমা নেন। NHK এর
বাংলা বিভাগের সাথেও তিনি সংশ্লিষ্ট ছিলেন।
শেখ আহমেদ জালাল মুজিবনগর সরকারের প্রতিনিধি নিসেবে জাপানে দায়িত্বপ্রাপ্ত
হন এবং এখানে স্বাধীনতা যুদ্ধের স্বপক্ষে জনমত তৈরিতে ভূমিকা রাখেন।
২৮ বছরের কুটনৈতিক জীবনে তিনি জাপান সহ বিভিন্নদেশে দায়িত্ব পালন করেছেন।
SAARK এর ডিরেক্টর জেনারেল ছাড়াও তিনি জাতিসংঘে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব
করেন। জাপান ফাউন্ডেশনের সম্মানিত ফেলো হিসেবে তিনি জাপান-বাংলাদেশ
দ্বিপাক্ষীক সম্পর্কের ৩০ বছর পূর্তীতে বিশেষ স্মারক গ্রন্থ প্রকাশ করেন।
কলাম লেখক হিসেবে তিনি দৈনিক ইত্তেফাকে 'জাপানের চিঠি', পাকিস্তান অবজারভারে
নিয়মিত 'টোকিও নিউজ লেটার' লিখতেন।
সব্যসাচি লেখক হিসেবে তার জাপানি শিশুদের গল্প বাংলা ভাষায় বঙ্গানুবাদ করেন,
যার নাম ছিল "সুন্দরবনের সোনালী হরিন।" এটি ছিল সে সময় দুই বাংলার অন্যতম
সেরা শিশুসাহিত্য। অন্যান্য গ্রন্থের মধ্যে 'পদ্মার ইলিশ' বিশেষভাবে
উল্লেখযোগ্য।
২০০৩ সালের ২১শে সেপ্টেম্বর তিনি লোকান্তরিত হন।
আজ বিজয় দিবসের প্রাক্কালে প্রায়্ত জাপান প্রবাসী এই দেশপ্রেমিক শেখ আহমেদ
জালালকে স্মরন করি। অভিবাদন জানাই তার সংগ্রহশালার জন্য। যেটি আমাদের মহান
স্বাধীনতা দিবসের ৪০ বছরে পরেও আমাদের সেই যুদ্ধকালীন সময়কে স্মরন করিয়ে
দেয়। দেশভাবনা নিজের অজ্ঞাতেই হৃদয়ের গভীরে দানা বেঁধে ওঠে।
অভিবাদন শেখ জালাল আপনাকে, দেশের প্রতি আপনার দায়বদ্ধতার ঋনপূরণের জন্য।
কাজী ইনসানুল হক, টোকিও
বিজয় দিবস ২০১০
kaziensan@gmail.com
[প্রথমপাতা] |
|