আড়ম্বরে অনুষ্ঠিত হলো টোকিও বৈশাখী
মেলা
কমিউনিটি রিপোর্ট ।। এপ্রিল
১৯, ২০১৬ ।।
সকাল থেকেই প্রবল ঝড়বৃষ্টি। উন্মুক্ত স্থানে এমনতর আবহাওয়ায় মেলার কি অবস্থা
দাঁড়াবে ভেবে সকলেই কমবেশি উদ্বিগ্ন ছিলেন। কিন্তু সময়ের সাথে সাথেই মন থেকে
কালোমেঘ কেটে যেতে শুরু করে। এ যে প্রাণের মেলা -এটাকে বাদ দেয়া অত সহজ নয়। তাই
সকাল থেকেই বৃষ্টির সাথে মানুষেরও ঢল নামে টোকিওর ইকেবুকুরোর নিশিগুচি উদ্যানে,
শহীদ মিনারের পাশে।
রোববার ১৭ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হলো টোকিও বৈশাখী মেলা। দূর্যোগপূর্ন আবহাওয়াতেও ঠিক
সকাল ১০টায় শুরু হয় অনুষ্ঠান। শুরুতেই সমস্বরে গাওয়া হয় বৈশাখের গান "এসো হে
বৈশাখ"। এভাবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর মেলার সাথে জড়িত উপদেষ্টা, সমন্বয়ক ও
অন্যান্যদের পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়।
উন্মুক্ত অনুষ্ঠানে বড়রা নিজেদের মতো করে গান-নাচ পরিবেশন করেন।
বড়দের উন্মুক্ত অনুষ্ঠানের পর শিশুদের অনুষ্ঠান শুরু হয়। প্রবল বৃষ্টি উপেক্ষা
করে প্রবাসে বড় হওয়া শিশুরা দেশিয় সংস্কৃতিকে তুলে ধরে। বিষয়টি ছিলো অনবদ্য। কথা
ছিলো পরিবেশনার পর রাষ্ট্রদূত নিজে শিশুদের হাতে পুরস্কার তুলে দেবেন। কিন্তু
প্রবল বর্ষণের কারণে রাষ্ট্রদূতের আগমনে বিলম্ব ঘটে এবং মেলার সমন্বয়কারী
শিশুদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।
এরপর জাপানিরা তাদের যন্ত্রসংগীত নিয়ে আসেন। জাপানি ঢোল সহ বিভিন্ন রকম
যন্ত্রের পরিবেশনা দর্শকদের সামনে তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে চ্যানেল আই এর প্রতিনিধিদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়। বহির্বিশ্ব
থেকে আসা প্রবাসীরা যারা অতীতে টোকিও বৈশাখী মেলার সাথে জড়িত ছিলেন -তাদেরকেও
দর্শকদের সামনে হাজির করা হয়।
এ সময় থেকেই ধীরে ধীরে আবহাওয়ার উন্নতি ঘটতে থাকে। আস্তে আস্তে সূর্য উঁকি দিতে
থাকে। বাড়তে থাকে মানুষের ঢল, বৈশাখী মেলা ফিরে পেতে থাকে তার চিরচেনা রূপ।
জাপানে প্রবাসীদের প্রিয় স্বরলিপি কালচারাল একাডেমি এবং উত্তরণ কালচারাল গ্রুপ
জাপান অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন।
অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে এসেছিলেন চ্যানেল আই তারকা লুইপা এবং ক্লোজআপ
ওয়ান তারকা মুহিন। তারা দর্শকদেরকে গানে গানে তুমুল মাতিয়ে রাখেন।
হাজার হাজার প্রবাসীর উপস্থিতিতে বৈশাখী মেলা প্রাঙ্গন হয়ে ওঠে ছোট্ট এক টুকরো
বাংলাদেশ। আড্ডা আর দেশিয় খাওয়া-দাওয়া -চটপটি, ফুচকা, হালিম, বিরিয়ানী -ঢাকার
গুলিস্তান নয়তো!! আশেপাশে সবই বাংলায়, চোখ বুঁজলেও বাংলা কথাই শোনা যায় -এ যেন
জাপান নয়!
পরিশেষে পরিচ্ছন্নতার দিক থেকে আমাদের দায়িত্বহীনতার পরিচয় বরাবরই দিয়ে থাকি,
এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। সারা ফুটপাথ, আশাপাশের রাস্তায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফেলা
হয়েছিলো খাবারের প্যাক, টিস্যু সহ আবর্জনা। থিয়েটার হলে খাবার নিয়ে প্রবেশ
নিষিদ্ধ থাকলেও কেউই তা মানেননি। কাজেই সচেতনতার অভাবে নিজ দেশের বদনাম
প্রসারেও মেলাটি অবদান রাখছে!
মেলার উদ্যোগতাদের কঠোর পরিশ্রমের ফসল এই সফল আয়োজনটি। তাদের অক্লান্ত
পরিশ্রমের প্রশংসা না করলেই নয়।
WARNING:
Any unauthorized use
or reproduction of
'Community' content is
strictly prohibited
and constitutes
copyright infringement
liable to legal
action.
[প্রথমপাতা] |