ধর্মীয় সম্প্রীতির অনন্য নজিরঃ জাপানে একই দিনে ঈদ উল আজহা ও দূর্গা পূজা
উদযাপিত
কাজী ইনসানুল হক ।।
অক্টোবর ৭, ২০১৪ ।।
জাপানে ঈদের দিনটি ছিলো ৫ অক্টোবর রোববার, যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য্য ও
ত্যাগের বিনিময়ে পালিত হলো মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব ঈদ উল
আজহা। একই দিন সার্বজনীন পূজা কমিটি জাপান প্রবাসী বাংলাদেশীদের উদ্যোগে
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বৃহৎ উৎসব শ্রী শ্রী দূর্গা পূজার ১৯ তম আয়োজনটি ছিলো।
দিনটি রোববার তাই মুসলমান ও হিন্দু উভয় সম্প্রদায়ের ধর্মপ্রাণ মানুষদের
জন্যে দিনটি ছিলো বহু প্রতীক্ষিত। আয়োজনে প্রতিকূলতা নিয়ে আসার কথা ছিলো
প্রমত্ত উম্মাদনায় ধেয়ে আসা মৌসুমের ১৮তম শক্তিশালী তাইফুন ফোনফ্যানের।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছিলো দুপুর নাগাদ শক্তিশালী তাইফুনটি টোকিও ও
তার আশেপাশে আঘাত হানবে। অথচ আগের রাত থেকেই বর্ষণ শুরু হয়ে যায়। তবুও এই
বাধা রুখতে পারেনি প্রবাসীদের। বৈরি আবহাওয়া উপেক্ষা করে উভয় সম্প্রদায়
তাদের ধর্মীয় আচার আয়োজনে সামিল হন। বৃষ্টিতে ভিজেও মুসলমানরা ঈদের নামাজ
আদায় করেন। পূজার অনুষ্ঠানেও অংশগ্রহণ ছিলো উল্লেখযোগ্য।
ঈদ উল আজহার প্রধান কাজ হচ্ছে কোরবানী। এই প্রবাসের শত প্রতিকূলতা ও
বিধি-নিষেধের মাঝেও কোরবানী দেয়ার অনুমতি সংগ্রহ করেন প্রবাসী ব্যবসায়ী
বাদল চাকলাদার। প্রবাসীদের অতি আপনজন বাদল ভাইয়ের আমন্ত্রন উপেক্ষা করার
সুযোগ নেই কারো। তাই নামাজ শেষে কমিউনিটির অনেকেই ছুটে যান মিসাতো সিটির
পদ্মা কমপ্লেক্সে। যথারীতি খাসি কোরবানী, ভুড়ি ভোজ, আনন্দ মেলা। রাজনৈতিক
মতভেদ থাকলেও ঈদের এই দিনে সবাই এক কাতারে এক স্থানে। এই বিরল দৃষ্টান্ত
জাপান প্রবাসীরা করে রেখেছেন দীর্ঘদিন ধরে।
সকাল ১১টা থেকে আকাবানে কিতা কুমিন সেন্টারে শুরু হয় দূর্গা পূজার আয়োজন।
যথারীতি অঞ্জলি, প্রসাদ ও ভোগ বিতরণ, পূজা বিষয়ক আলোচনা, ভক্তিমূলক
অনুষ্ঠান, সন্ধ্যা আরোতি -সবই ছিলো। রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন অনুষ্থানে
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষরাও ঈদের
নামাজ ও পারিবারিক ধর্মীয় অনুষ্ঠান শেষে পূজার অনুষ্ঠানে যোগ দেন একটু বেলা
করেই। উত্তরণ কালচারাল গ্রুপ, জাপান ধর্মীয় অনুষ্ঠানটিতে অংশ গ্রহণ করে। এ
ছাড়াও স্থানীয় ও আমন্ত্রিত শিল্পীরা অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন। দু'জন জাপানি
শিল্পীর মনোমুগ্ধকর বাজনা দর্শকদের
মুহূর্মুহু
করোতালির মাধ্যমে তাদেরকে
স্বাগত জানায়। সেতার বাজান ইনুরি কেনজি ও তবলায় ইশিতা সৌরি
দু'জনের এই যুগলবন্দি দর্শকরা উপভোগ করে।
সব ধর্মের মাঝেই ধর্মীয় সম্প্রীতির কথা বলা আছে। সেটাই ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা,
সেটাই কল্যানকর।
WARNING:
Any unauthorized use
or reproduction of
'Community' content is
strictly prohibited
and constitutes
copyright infringement
liable to legal
action.
[প্রথমপাতা] |