|
সড়কে থাকছেন জাপানের "হোমলেস"রা
কমিউনিটি রিপোর্ট ।। ডিসেম্বর ১৮, ২০১৫ ।।
প্রতিরাতেই টোকিও'র শিঞ্জুকু স্টেশনে একই ঘোষণা, হোমলেস'দের রাতের জন্যে
স্টেশন ছেড়ে যাওয়ার আহ্বান। লক্ষ লক্ষ মানুষ প্রতিদিন হেঁটে চলেন তাদের
সামনে দিয়ে, বেশির ভাগ সময়েই এসব হোমলেসরা থাকেন উপেক্ষিত।
৮৪ বছরের কোজি কাতো, আগে মেশিনারির বিভিন্ন কাজ করতেন। কিন্তু এখন আর কিছু
করেন না, তাই তার ঠাঁই হয়েছে এখানে। শিঞ্জুকু স্টেশনে রাত কাটানোদের বেশির
ভাগেরই বয়স ৬৫ বা তার বেশি, প্রবীন হয়ে পড়া জাপানি সমাজের এ যেন এক
প্রতিচ্ছবি। কাতো নিজের স্বাস্থ্য নিয়ে খুব বেশি নিয়ে চিন্তিত নন, তাকে শুধু
খাবার নিয়েই ভাবতে হয়। ভাগ্য ভালো থাকলে কোনো কোনো সময়ে সপ্তাহে ৫০ ডলার
পর্যন্ত কামাতে পারেন। ইলেক্ট্রনিক্স স্টোরের সামনে লাইনে দাড়িয়ে থাকার
মজুরি!
বিশ্বের বৃহত্তম পরিবহন কেন্দ্রস্থল, খুচরা বিক্রেতাদের স্বর্গ ক্ষেত্র আর
দরিদ্র জাপানিদের বিচরণ এলাকা।
রেন ওনিশি একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন, যারা এসব হোমলেসদের বিভিন্ন
ভাবে সহায়তা করে থাকে। তিনি প্লাস্টিক, কার্ড বোর্ড আর পুরোনো ছাতা দিয়ে
তৈরি একটি রাজ্যে নিয়ে চলেন যার ঠিক পাশেই রয়েছে সুরম্য অট্টালিকার সারি,
টোকিও মিউনিসিপ্যাল সরকারের কার্যালয়। জাপানের হোমলেস'রা সাধারণ ভাবে
পরিস্কার ভাবেই বাস করেন এবং তারা হাতে তৈরি ঘরে ঢোকার সময় জুতা খুলে রাখার
ঐতিহ্যকে ঠিকই অনুসরণ করেন।
দিনের বেলায় তার এ সবকিছু পরিপাটি করে গুছিয়ে রাখেন, ছোটখাট জিনিসের সন্ধানে
বের হন যা বিক্রি করে হয়তো কিছুটা পয়সা হাতে আসতে পারে।
বিপরীতভাবে অনেক কর্মরত জাপানিই আলাদা বাড়ি ভাড়া করার ক্ষমতা রাখেন না।
তাদের কেউ কেউ ইন্টারনেট ক্যাফেতে রাত কাটিয়ে দেন। দেড় বর্গমিটারের একটি
ছোট্ট আলাদা কক্ষ, ১৫ ডলারেই ৬ ঘন্টা সেখানে কাটানো যায়। সেখানে রয়েছে
খাবার, যতখুশী তত পানীয়, আছে লাইব্রেরী -সেখান থেকে জাপানি কমিকস বই মাঙ্গা
নিয়ে পড়তে পাড়ার সুবিধা। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বাড়ি ভাড়া করতে গেলে ৪ মাসের
ভাড়া জমা রাখতে হয় যা নিম্নবিত্তদের পক্ষে দেয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে।
অনেকেই এভাবে অনিশ্চিত গন্তব্যে দিনের পর দিন কাটাতে থাকেন। সরকারের কাছে
সহায়তা পাওয়া সম্ভব কিন্তু তার আগে আত্মীয়-স্বজনদের কাছে পয়সা চাইতে হবে।
জাপানি সমাজে এটিকে লজ্জাজনক হিসেবে দেখা হয়। ফলে যারা বাড়ি ভাড়া করতে
পারেন না তাদের জন্যে বিকল্প পথ আর প্রায় থাকেনা। তারা সড়কে ছায়ার মতো জীবন
যাপন করতে থাকেন। লাইফলিক/ সিএনএন।
WARNING:
Any unauthorized use
or reproduction of
'Community' content is
strictly prohibited
and constitutes
copyright infringement
liable to legal
action.
[প্রথমপাতা] |
|