মাকুহারি মেসসে'তে টোকিও গেম শো শুরু
কমিউনিটি রিপোর্ট ।। সেপ্টেম্বর ৭, ২০১৪ ।।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে শনিবার দুপুরে ঢাকায় পৌঁছুলে তাকে লাল
গালিচা সম্বর্ধনা দেয়া হয়। এর মাধ্যমে আবে বাংলাদেশ ও শ্রীলংকায় তিনদিনের
রাষ্ট্রীয় সফর শুরু করেছেন। তাঁর এই সফর এমন সময় অনুষ্ঠিত হচ্ছে যে সময়
দক্ষিণ এশিয়ায় চীন তার প্রভাব ক্রমগত বাড়াতে চাইছে।
অর্থনীতির গতিশীলতা বৃদ্ধি এবং নিরাপত্তা সম্পর্ককে জোরদার করতে ঢাকা
পৌঁছানোর পর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে হজরত শাহ জালাল
আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্বাগত জানান।
শনিবার পরে দুই দেশের মধ্যে শীর্ষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে টোকিও ছাড়ার আগে আবে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন বাংলাদেশ
ও শ্রীলংকাকে "অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমান প্রভাবশালী দেশ"
হিসেবে উল্লেখ করেন।
"আমি আশা করি সম্পর্কোন্নয়নের মাধ্যমে জাপানের অর্থনীতির সাথে উভয় দেশের
প্রাণশক্তির সূচনা ঘটবে" আবের সংগে ৫০ জনেরও বেশি সদস্যের একটি শক্তিশালী
বাণিজ্যিক প্রতিনিধি দল রয়েছেন।
গত ১৪ বছরে এটি হচ্ছে প্রথম কোন জাপানি প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফর আর
শ্রীলংকাতে ২৪ বছর পর কোনো জাপানি প্রধানমন্ত্রী সফর করছেন।
বাংলাদেশ আবে'র এই সফরকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের একটি "মাইলফলক" হিসেবে
অভিহিত করে আশা করছে এর মাধ্যমে রেল সেতু এবং ব্রহ্মপুত্র নদী নীচ দিয়ে একটি
সুড়ঙ্গ নির্মাণে অবকাঠামো প্রকল্পে বিনিয়োগ বাড়বে।
"আমরা চাই এখন বিনিয়োগ হোক" বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রী এ. এইচ. মাহমুদ
আলী বলেন "এই সফর আমাদের সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক হিসেবে বিবেচনা
করা হচ্ছে"।
বিমানবন্দরে লাল গালিচা সংবর্ধনার পর শনিবার আবে জাতীয় স্মৃতিসৌধ ও
বঙ্গবন্ধু জাদুঘর ঘুরে সোনারগাঁও হোটেলে বাংলাদেশ-জাপান বিজনেস ফোরামের
অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
সেখান থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গিয়ে শীর্ষ বৈঠকে অংশ নেন আবে, যাতে
বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দুই প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকের পর যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, “এশিয়া ও প্রশান্ত
গ্রুপের প্রতি সংহতি ও একাত্মতা জানিয়ে বাংলাদেশ জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের
অস্থায়ী সদস্য পদে নির্বাচনে ২০১৬-১৭ মেয়াদে জাপানের প্রার্থিতা সমর্থনের
সিদ্ধান্ত নিয়েছে।"
“একইসঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধু জাপানের জন্য বাংলাদেশ তার নিজ প্রার্থিতা
প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তও গ্রহণ করেছে।”
বাংলাদেশ ১৯৭৯-১৯৮০ এবং ১৯৯৯-২০০০ মেয়াদে নিরাপত্তা পরিষদে অস্থায়ী সদস্য
ছিল।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী তাঁর উন্নয়ন পরিকল্পনায় বাংলাদেশকে গুরুত্ব দেয়ার কথা
বলেছেন। বাংলাদেশকে আগামী ৪-৫ বছরে ৬০০ কোটি ডলার সহায়তা দেয়ার ঘোষণা দেন
তিনি।
কক্সবাজারের মাতারবাড়ীতে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে
সহায়তা দিচ্ছে জাপান। বঙ্গোপসাগরের তীরে বিশেষ অর্থনৈতিক এলাকা (বে অফ
বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রোথ বেল্ট-বিগ বি) প্রতিষ্ঠাই বাংলাদেশকে
সহযোগিতার অগ্রাধিকারে রাখার প্রতিশ্রুতিও দেন আবে।
দ্বিপাক্ষিখ বৈঠকে বাংলাদেশের শেখ হাসিনা বাংলাদেশ-জাপান দুই দশকের
অর্থনৈতিক সহযোগিতার বিষয়টি তুলে ধরে বলেন, বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে
চমৎকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিদ্যমান। সময়ের পরিক্রমায় জাপান বাংলাদেশের
অন্যতম উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশকে দেয়া জাপানের ১২ বিলিয়ন ডলারের অর্থ সহায়তা
এবং আগামী ৪-৫ বছরে আরো ৬০০ কোটি ডলার সহায়তার প্রতিশ্রুতির কথাও উল্লেখ
করেন তিনি।
গত মে মাসে জাপান সফরের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, “দ্বিপাক্ষিক
সম্পর্কের সকল ক্ষেত্রকে সম্প্রসারণ এবং সুদৃঢ় করার লক্ষ্যে আমি এবং
জাপানের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে যৌথভাবে সমন্বিত অংশীদারিত্ব
কর্মসূচির উদ্বোধন করি।”
বিনিয়োগ ও অবকাঠামো উন্নয়নে বাংলাদেশকে সহায়তা দিতে জাপান কর্তৃক বিগ-বি
উদ্বোধনের কথাও উল্লেখ করে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
জাপানের নির্মাণ শিল্প এবং স্বাস্থ্য ও নার্সিং সেবায় বাংলাদেশের সহযোগিতা
চেয়ে প্রস্তাবও দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা রয়েল বেঙ্গল টাইগারের ছবির একটি অ্যালবাম শিনজো আবেকে
দেন। গত মে মাসে সফরের সময় জাপানের প্রধানমন্ত্রীকে দু'টি বাঘ উপহারের
প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
আবে তার দেশে তৈরি করা বাংলাদেশী মুদ্রার কয়েকটি উপহার হিসেবে শেখ হাসিনাকে
দেন। এএফপি।
WARNING:
Any unauthorized use
or reproduction of
'Community' content is
strictly prohibited
and constitutes
copyright infringement
liable to legal
action.
[প্রথমপাতা] |