বাংলাদেশের গ্রামে স্কুল নির্মাণে নিইগাতা দম্পতি স্বীকৃত
কমিউনিটি রিপোর্ট ।। জুলাই
১, ২০১৯ ।।
জাপানের নিইগাতা প্রিফেকচারের বাসিন্দা ৫২ বছরের এমডি নুরুল এলাহি এবং তার
স্ত্রী মিসাকো (৬৯) শিক্ষার আনন্দ উপভোগ করে এমন শিশুদের চোখে উচ্ছ্বলতা দেখার
চেয়ে আর কিছুই আনন্দের নেই বলে মনে করেন, নিজেদেরকে তারা পরিতৃপ্ত মনে করেন।
বাংলাদেশী-জাপানি দম্পতির ইচ্ছা এলাহি'র গ্রামের শিশুদেরকে শিক্ষার সুযোগ
উন্মুক্ত করতে চান। দক্ষিণ এশিয় দেশটির উন্নয়নে ২০১৭ সালে তারা নামাপুতিয়া'র
ছোট্ট কৃষিভিত্তিক গ্রামে প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনে উৎসাহিত হন, তারা এ জন্যে
জাপান থেকে ৬০ লক্ষ ইয়েন (৫৬ হাজার মার্কিন ডলার) অনুদান সংগ্রহ করেন।
জুনের ১৫ তারিখ নিইগাতা কর্তৃপক্ষ "ভবিষ্যত প্রতিভা উন্নয়নে অবদান" তাদের এই
অবদানের স্বীকৃতি দিয়েছে।
রাজধানী ঢাকা থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরেরে গ্রাম নামাপুতিয়া এবং সেখানে কোনো
বিদ্যালয় ছিলো না। গ্রামের বেশির ভাগ শিশুদেরকেই অল্প বয়স থেকে কৃষি কাজ করতে
হয় অথবা তাদের ভাইবোনদের দেখাশোনা করার দায়িত্ব দেওয়া হয়।
এলাহি ১৯৮৯ সালে জাপানে আসেন এবং নিইগাতা'র মিৎসুকে শহরে ধাতু ঢালাইয়ের কাজ
করেন, পরবর্তীতে তার সাথে মিসাকো'র একটি কবি ক্লাবে পরিচয় হয়।
বিয়ের পর মিসাকো প্রথম তার স্বামীর গ্রামে গিয়ে বিস্মিত হয়ে যান। এতো কঠিন
অবস্থার মধ্যে থেকেও সেখানকার শিশুরা ডাক্তার বা শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন দেখে।
তিনি গভীর ভাবে মুগ্ধ হন।
২০০৯ সালে তার শরীরে ক্যান্সার ধরা পড়ে এবং তা থেকে পরে সুস্থ হয়ে উঠলে তিনি
তার দ্বিতীয় জীবনে স্বামীর গ্রামে একটি স্কুল প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেন।
২০১১ সালে তারা খরচ বহনের জন্যে জাপানে ফান্ড খুঁজে পান, তারা মানুষের কাছ থেকে
প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনে অনুদান সংগ্রহ করতে শুরু করেন। একটি দ্বিতল স্কুল
ভবন নির্মাণের কাজ ২০১৬ সালে সমাপ্ত হয় এবং ১৬০ জন শিশু পরের বছর থেকে স্কুলে
যাওয়া শুরু করে।
তাদেরকে কোনো বেতন দিতে হয় না, পাঠ্যবই সরকার বিনামূল্যে সরবরাহ করে থাকে। যে
সব পিতামাতারা প্রাথমিক ভাবে কাজে হাত লাগানোর বদলে স্কুলে পাঠাতে অনিচ্ছুক
ছিলেন তারাও এখন স্কুলের বিভিন্ন অনুষ্ঠান যেমন গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠানের মতো
অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে সন্তানদের অর্জন প্রত্যক্ষ করেন।
২০১৬ সালের হিসেবে বাংলাদেশে শিক্ষার হার ছিলো ৭২ শতাংশ কিন্তু শহর আর গ্রামের
মধ্যে পার্থক্য ছিলো অনেক। নামাপুতিয়া'তে শিক্ষার হার শত ভাগে উন্নীত করার
প্রত্যাশায় এই দম্পতি স্কুল শেষের পর বড়দেরকেও শিক্ষার ব্যবস্থা চালু করেছেন।
নিইগাতা প্রিফেকচারের নাগাওকা শহর থেকে তারা "কোমে হিয়াপ্পিয়" পুরস্কার পান।
পুরুস্কারের নামটি "একশ ব্যাগ চাল" মেইজি যুগের গোড়ার দিকে (১৮৬৮-১৯১২)
নাগাওকার দম্পতি যারা শিক্ষার গুরুত্বের পক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন তাদের গল্প থেকে
এসেছে। কিয়োদো।
WARNING:
Any unauthorized use or reproduction of 'Community' content
is strictly prohibited and constitutes copyright infringement liable to
legal action.
[প্রথমপাতা] |