[প্রথমপাতা] |
সাপ্তাহিক সম্পাদক
গোলাম মোর্তোজার সাথে প্রবাসীদের মত বিনিময়
কমিউনিটি রিপোর্ট ।। সেপ্টম্বর ২০, ২০১০ ।।
বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত জনপ্রিয় ম্যাগাজিন "সাপ্তাহিক" এর সম্পাদক ও
বিশিষ্ট সাংবাদিক গোলাম মোর্তোজা রবিবার বিকেলে টোকিওর কিতা-কু তাকিনোগাওয়া
কাইকানে প্রবাসীদের সাথে এক মত বিনিময় সভায় মিলিত হন। পরবাস সম্পাদক ও "সাপ্তাহিক"
এর জাপান প্রতিনিধি কাজী ইনসানুল হকের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে প্রবাসের
বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জাপানের ক্ষমতাসীন ডিপিজের ডায়েট
সদস্য জনাব আকিরা ইশি।
জনাম মোর্তোজা অনুষ্ঠানের শুরুতে তার বক্তব্যে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে
গিয়ে বিভিন্ন প্রতিকুল পরিস্থিতির মুখোমুখি হবার অভিজ্ঞতার বর্ণনা করেন।
প্রসঙ্গক্রমে তিনি উল্লেখ করেন, ১/১১ সময়কার দিনগুলোর কথা। টিভিতে অনুষ্ঠান
করে বাসায় ফেরার পথে তাকে হুমকি দিয়ে বলা হতো কাল থেকে আপনার আর ওখানে
অনুষ্ঠান করতে আসার দরকার নেই। সে সময় তার কন্ঠরোধ করার জন্য ৬ বার এনবিআর
তার ট্যাক্স ফাইল পরীক্ষা করে সেখানে বিচ্যুতি খুঁজে বের করার চেষ্টা করে।
পরে তিনি তার এক বন্ধুর মাধ্যমে জানতে পারেন তার স্ত্রীর ট্যাক্স ফাইল
অন্তন্ত ২৩ বার পরীক্ষা করা হয় ডিজিএফআইতে।
মোর্তোজা বলেন, এই শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতেও তারা অন্ততঃ ৯০ ভাগ সংবাদ
প্রকাশের চেষ্টা করেছেন। কিন্তু তাতে করে সরকারের চোখ রঙানি এবং সর্বদাই
হুমকির সম্মুখিন হতে হতো।
তিনি বলেন, ডিজিএফআইতে বিভিন্ন পত্রিকার সম্পাদক বা বার্তা সম্পাদকদেরকে
ডেকে একটি সিডি ধরিয়ে প্রচ্ছন্ন হুমকি দিয়ে বলা হয় "আশা করছি, এটি আপনার
পত্রিকায় প্রকাশিত হবে"। সিডিটি ছিল আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল জলিলের
স্বীকারোক্তির।
মোর্তোজা বলেন, তত্বাবধায়ক সরকারকে সেনা সমর্থিত সরকার বলা হলেও সেটি আসলে
ছিল, সেনা শাসনেরই নামান্তর মাত্র।
তিনি বলেন, তারা নিরপেক্ষ নন বরং সত্যের পক্ষ। তিনি মনে করেন বিরোধী দলের
চাইতে সরকারি দলের দায়িত্ব বেশি তাই তাদের ত্রুটি বিচ্যুতি বেশি তুলে ধরেন,
কিন্তু সরকার ভাবেন তারা সরকারের শত্রু।
জনাব
মোর্তোজার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের পর প্রবাসীরা তাকে বিভিন্ন প্রশ্ন করার
সুযোগ পান। তিনি তাদের বিভিন্ন প্রশ্নর জবাব দেন। এক প্রশ্নের জবাবে জনাব
মোর্তোজা দ্ব্যার্থহীন কন্ঠে বলেন, তিনি
সব সময়েই জামাত শিবিরের বিপক্ষেই
অবস্থান করছেন এবং করবেন। ৭১এ যারা মানব ইতিহাসের অন্যতম নারকীয় হত্যাযজ্ঞ
চালিয়েছে, আমাদের অসংখ্য নারীকে তুলে দিয়েছে পাকিস্তানিদের হাতে তাদের প্রতি
সমব্যাথি হবার কোন উপায় নেই।
দেশের প্রায় সব সম্পাদক কেন আমার দেশের সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে মুক্তির
প্রশ্নে কেন বিবৃতি দিলেন -এমন এক প্রশ্নের জবাবে মোর্তোজা বলেন, মাহমুদুর
রহমানকে যদি তার নিজস্ব অপরাধের জন্য গ্রেপ্তার করা হতো তাহলে কেউ কিছু হয়ত
বলতো না। কিন্তু সরকার যে হাস্যকর অভিযোগ এনেছে তাতে গ্রেপ্তার করাটা
ছেলেখেলার মত মনে হয়েছে। আমরা ঐ প্রক্রিয়াটির নিন্দা করেছি।
বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জনাব এস ডি এস ইসলাম নান্নু মেশিন রিডেবল পাসপোর্টের অভাবে
আফ্রিকাতে ভিসা পেতে সমস্যায় পড়ছেন বিষয়টি নিয়ে তিনি সাপ্তাহিক সম্পাদকের
দৃষ্টি আকর্ষন করলে তিনি বলেন আপনাদের উচিত দূতাবাসের উপর এসব নিয়ে চাপ
সৃষ্টি করা। জনাব নান্নু বলেন, তিনি বিশ্বের ১৭টি দেশে অর্থ বিনিয়োগ করেছেন
কিন্তু নিজের বাংলাদেশেই বিনিয়োগ করতে পারেনি আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ও
সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে অসহযোগীতার কারনে।
অনুষ্ঠানে ডিপিজের ডায়েট সদস্য আকিরা ইশি তার বক্তব্যে বাংলাদেশে শিশুদের
অবস্থার উন্নয়ন এবং বিশুদ্ধ পানির সরবরাহের ক্ষেত্রে জাপানি বিনিয়োগ
বিবেচনাধীন রয়েছে।
মত বিনিয়ময় সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বিশিষ্ট সাহিত্যিক বদরুল
বোরহান, সজল বড়ুয়া, বাকের মাহমুদ, আব্দুল ওয়াদুদ, জেড এম আবুসিনা,
দূতাবাসের প্রথম সচিব নাজমুল হুদা, সাপ্তাহিকের টোকিও প্রতিনিধি রহমান মনি
প্রমুখ।
[প্রথমপাতা] |
|