জাপানি হোয়িকোয়েন-এ হালাল খাবার দিয়ে ব্যতিক্রমধর্মী বারবিকিউ এবং একজন
কিয়োএ সুহাকো
রাহমান মনি ।।
জাপানে ইসলামের জয় জয়কার দিন দিন বেড়েই চলেছে। সাথে সাথে জনপ্রিয় হচ্ছে
হালাল খাবার ।
কিছু কিছু ক্ষেত্রে জাপানিরাও এগিয়ে আসছে স্বতঃস্ফূর্তভাবে । অবশ্যই তা
প্রবাসী বাংলাদেশীদের অনুপ্রেরণা এবং পরিশ্রমের ফল বলা যায় ‘ আজ তেমনই একজন
জাপানী মহীয়সী নারীর অবদানের কথা জানাবো । নাম তার কিয়োএ সুহাকো।
‘লাইফ স্কুল কিরিগাওকা’ টোকিওর কিতা সিটিতে অবস্থিত কিন্ডার গার্ডেন
পরিচালনা গ্রুপ “সুবোমি কাই” পরিচালিত একটি কিন্ডার গার্ডেন, যা জাপানিজ
নার্সারি ।
সমাজকল্যাণ কর্পোরেশন সুবোমি-কাই, মোট ১১ টি লাইসেন্সপ্রাপ্ত নার্সারি
স্কুল, চাইল্ড ডেভেলপমেন্ট সাপোর্ট সেন্টার এবং স্কুল-পরবর্তী দিনের পরিষেবা
পরিচালনা করে থাকে।
সুবোমি কাই প্রধানত টোকিওতে অবস্থিত হ’লেও চিবা, কানাগাওয়া, ইবারাকি এবং
আইচি (নাগোয়া)তেও সংস্থাটির কার্যক্রম পরচালনা করে থাকে।
লাইফ স্কুল কিরিগাওকা তে জাপানি ছাড়াও আমেরিকা , কানাডা , চীন , ফিলিপাইনস
, বাংলাদেশ , ভারত পাকিস্তান সহ মোট ১১টি দেশের শিক্ষার্থী রয়েছে যা মোট
শিক্ষার্থীর ২২% । বিদেশী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৫৫% আবার বাংলাদেশী
বংশোদ্ভূত। অর্থাৎ বাংলাদেশীরা দ্বিতীয় সংখ্যা গরিষ্ঠ ।
মোট শিক্ষার্থীর ৬% মুসলিম বা ইসলাম ধর্ম্যালম্বী ।
প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক কিয়োএ সুহাকো সুত্রে জানা যায়, লাইফ স্কুল
কিরিগাওকাতে, ২0% এরও বেশি শিশু বিদেশী নাগরিক এবং তাদের অর্ধেকেরও বেশি
মুসলিম।
তিনি আরো বলেন, দুর্ভাগ্যবশত, জাপানের বর্তমান পরিস্থিতি হ’লো ইসলাম ও
হালালের বোঝাপড়া ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েনি।
কিয়োএ সুহাকো বলেন, প্রত্যেক শিক্ষার্থীদেরকে লালন পালনের আমাদের কর্পোরেট
দর্শনের ভিত্তিতে, আমরা প্রত্যেক শিশুকে এক একজন ব্যক্তি হিসেবে সম্মান করি।
তাই , প্রতিটি শিশুর নিজ ধর্মীয় অনুভূতি এবং চর্চার প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল।
সেই বিবেচনা থেকে এখানে ‘স্কুল ফিডিং’-এ মুসলিম শিক্ষার্থীদের জন্য হালাল
খাবার সরবরাহ করা হয়ে থাকে। এতে করে অভিভাবকদের কাছে থেকে ব্যপক সাড়া পেয়ে
থাকি । বিশেষ করে বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা অগ্রণী ভূমিকা পালন করে
থাকেন ।
তাছাড়া শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের সমন্নয়ে হালাল খাদ্য সংস্কৃতি পরিচিতি এবং
প্রসারে বিভিন্ন আয়োজন করা হয়ে থাকে ।
তারই ধারাবাহিকতায় ২৪ সেপ্টেম্বর রোববার ছিল মুসলিমদের সাথে অন্যান্য
ধর্মীয়দের ‘হালাল খাদ্যে এক সাথে বারবিউকিউ আয়োজন’। যার মুল ভুমিকায় ছিল
বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের অভিভাবকগন । বিশেষ করে নাইম আহসান , ফজলুল হক
পাভেল , আব্দুল জলিল এবং কাশেম আলতাফ এর অবদান অনস্বীকার্য ।
কিয়োএ সুহাকো আরও বলেন , ‘আমার জীবনের বেশ একটা সময় আমি সিংগাপুরে কাটিয়েছি।
আমি সেখানে মুসলিম কমিউনিটির সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে গিয়েছিলাম । মুসলিম
সংস্কৃতি আমি কাছ থেকে দেখেছি , ভালভাবেই জানি । এছাড়াও যেহেতু প্রবাসে
ছিলাম তাই , প্রবাসীদের বিভিন্ন বিড়ম্বনা , ধর্ম পালনে বিভিন্ন বাধার শিকার
আমি ভালই উপলব্দী করতে পারি ।
তাই , আমি নিজ সামর্থ্য থেকেই মুসলিম কমিউনিটির সাথে তাদের পাশে দাঁড়িয়ে
জাপানে প্রতিটি মুসলিম শিশুর অধিকার নিশ্চিতকরণে কাজ করতে চাই । হয়তো আমার
এই প্রচেষ্টা খুবই সামান্য , সমুদ্রে এক ফোটা শিশির দান করার মতো , তবু
শুরুটা তো করতে পারছি । এটাও বা কম কিসে! এভাবেই বিন্দু বিন্দু’র সমন্বয়ে
সিন্ধুর সৃষ্টি হলে হতেও পারে । আমাদের কোম্পানির যে ১১ টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে,
প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে এই ১১টিতে স্কুল ফিডিং এ হালাল খাবার সিস্টেম চালু
করার জন্য কাজ শুরু করেছি । চেস্টা করছি বাস্তবায়নে ।
কিয়োএ সুহাকো আরো বলেন, আমাদের সম্প্রদায় বিনিময় কার্যক্রমের অংশ হিসাবে,
আমরা প্রতি মাসের চতুর্থ রবিবার জাপানি ভাষা সহায়তা এবং আইনি পরামর্শ
প্রদান করে থাকি ।
উল্লেখ্য কিয়োএ সুহাকো বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত শিক্ষার্থীদের বাংলা নববর্ষ
শুভেচ্ছা কার্ড , ঈদ শুভেচ্ছা এবং অন্যান্য সকলের জন্য নিজ নিজ সংস্কৃতির
বিশেষ দিবস গুলিতে শুভেচ্ছা জানিয়ে থাকেন।
WARNING:
Any unauthorized use or reproduction of 'Community' content
is strictly prohibited and constitutes copyright infringement liable to
legal action.
[প্রথমপাতা]
|