|
জাপানে দুর্গোৎসব ২০২২ পালিত
কমিউনিটি রিপোর্ট ।।
অক্টোবর ৪, ২০২২ ।।
বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ।
যে, যে ধর্মই পালন করুক না কেন বাঙালী ভৌগলিক এবং আদর্শগত ভাবেই ধর্মপ্রাণ এক
জাতি। প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে শুরু করে বৈশ্বিক মহামারী কোন কিছুই বাঙালীর ধর্ম
পালনে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি, তা দেশ কিংবা বিদেশ যেখানে থাকুক না কেন।
সনাতন ধর্ম্যালম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব ২০২২ ধর্মীয়
ভাবগাম্ভীর্যে যথা আমেজে শুরু হয়েছে । যার লেশ এসে পড়েছে জাপানেও। জাপানে প্রায়
পাচ শতাধিক বাঙালী সনাতন ধর্ম্যালম্বীদের বসবাস । রয়েছে সার্বজনীন পূজা কমিটি
জাপান ।
এই কমিটি প্রতি বছর সারম্ভে ধর্মীয় বিভিন্ন পার্বণ পালন করে আসছে জাপানে ।
এবছরও বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যে টোকিওতে উদযাপিত হয়েছে
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম বৃহৎ ও প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা।
শঙ্খ, উলুধ্বনি, ঢাক-কাঁসরের বাদ্যবাজনা, পূজারি-ভক্তদের পূজার্চনা, অঞ্জলি
প্রদান, প্রসাদ ও ভোগ বিতরণ, পূজা বিষয়ক আলোচনা, ভক্তিমূলক গান, সন্ধ্যা আরতি,
সিঁদুর ছোঁয়া এবং সবশেষে নেচেগেয়ে দেবী দুর্গাকে বিদায়ের মধ্য দিয়ে বিষাদের
ছায়ায় সনাতন ধর্মাবলম্বীরা এ উৎসব পালন করেন।
সার্বজনীন পূজা কমিটি জাপান প্রতিবছরের মতো এবারও এ মহতী উৎসবের আয়োজন করে।
এবারের আয়োজনটি ছিল সার্বজনীন পূজা কমিটি জাপান’র ২৭ তম আয়োজন।
২ অক্টোবর রোববার টোকিওর কিতা সিটি ‘উকিমা ফুরেআইকান’-এ অস্থায়ী মণ্ডপে
দিনব্যাপী এ উৎসবে মেতে ওঠে আপামর সনাতন ধর্ম্যালম্বীরা । ভিন্ন ধর্মাবলম্বীরাও
দুর্গোৎসবে অংশগ্রহণ করে থাকেন। করোনার কারনে ২ বছর দুর্গা পূজার (যদিও ‘ঘট
পূজা’ আয়োজন করা হয়েছিল) আয়োজন করতে না পারা এবং একই দিনে একই সময়ে এবং একই শহরে
অনতিদূরে ভিন্ন আয়োজন থাকা সত্যেও এবছর পূজায় উপচে পড়া ভিড় ছিল লক্ষণীয় ।
আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে সস্ত্রীক উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত
সাহাবুদ্দিন আহমেদ।
প্রধান অতিথি রাষ্ট্রদূত সাহাবুদ্দিন আহমেদ তার শুভেচ্ছা বক্তব্যে সকলকে শারদীয়
শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, শারদীয় দুর্গোৎসবের মূলমন্ত্র হচ্ছে, অশুভ শক্তির বিনাশ
এবং শুভ ও সত্যের বিকাশ। শুভ ও অশুভ শক্তির চিরকালের দ্বন্দ্বে শুভ শক্তি
বিজয়ের গৌরব ঘোষণা করে এ উৎসব।
তিনি আরো বলেন, আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সব সময় বলে থাকেন , “ধর্ম যার যার,
উৎসব সবার” কথাটি আমি মনেপ্রানে বিশ্বাস করি এবং মানিও । তাই এই উৎসব সার্বজনীন।
বাংলাদেশেও সকলে মিলেমিশেই এই উৎসব পালন করে থাকেন।
পূজা বিষয়ক ধর্মীয় আলোচনায় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সার্বজনীন পূজা কমিটি
জাপান’র নেতারা।
আলোচনা সভা শেষে শিশু-কিশোর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে একঝাঁক শিশু-কিশোর অংশ নিয়ে
থাকে।
এছাড়াও ডঃ তপন কুমার পাল পরিচালিত ‘শিশু শিল্পী একাডেমী জাপান’ এর শিশু শিল্পীরা
মনোমুগ্ধকর নৃত্য পরিবেশন করে দর্শকদের তাক লাগিয়ে দেয় ।
ডঃ তপন কুমার পাল এর পরিকল্পনায় শিশু কিশোরদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটি পরিচালনা
করেন ববিতা পোদ্দার।
শিশু-কিশোরদের সাংস্কৃতিক পর্বের শেষে ভক্তিমূলক সংগীতানুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন
স্থানীয় প্রবাসী সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘উত্তরণ’ বাংলাদেশ কালচারাল গ্রুপ জাপান ।
সবশেষে সন্ধ্যা আরতি, মিষ্টিমুখ, বধূদের সিঁদুর ছোঁয়া, আনন্দ আলিঙ্গন, প্রণাম
এবং বিষাদের ছায়া প্রতিমার প্রতীকী বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হয় সার্বজনীন পূজা
কমিটি, জাপান আয়োজিত ২০২২ সালের শারদীয় উৎসবের সমাপ্তি ঘটে ।
বাংলাদেশে এবছর ১ অক্টোবর থেকে ষষ্ঠী পূজার মাধ্যমে শুরু হওয়া এবং ৫ অক্টোবর
প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে দুর্গা পূজার সমাপ্তি হলেও জাপানে একদিনের মধ্যেই ৫
দিনব্যাপী পূজার সকল আচার, আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে হয় সার্বিক পরিস্থিতি
বিবেচনা করেই। তার মধ্যে সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে হল প্রাপ্তির সমস্যা ।
উল্লেখ্য ২ অক্টোবর রোববার বাংলাদেশে সপ্তমাদিকল্পারম্ভ ও সপ্তমীবিহিত পূজা ,
মহাত্মা গান্ধীর জন্মদিবস এবং আন্তর্জাতিক অহিংসা দিবস পালিত হয়েছে।
WARNING:
Any unauthorized use or reproduction of 'Community' content
is strictly prohibited and constitutes copyright infringement liable to
legal action.
[প্রথমপাতা] |
|