(মতামতের
জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়)
প্রসঙ্গ: টোকিওস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন
দেলোয়ার হোসেন ডিও
টোকিও, জাপান
গত ২৪শে অক্টোবর রবিবার ২০২১ টোকিওস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের সামনে বাংলাদেশ
এবং ভারতের সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বী ইসকন গ্রুপের উদ্যোগে সম্প্রতি
বাংলাদেশে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের দূর্গাপূজা উপলক্ষে ঘটে যাওয়া ঘটনা নিয়ে
মানববন্ধন করে।
আমরা সর্বদা এসব সাম্প্রদায়িক সহিংসতার বিপক্ষে।এসব সাম্প্রদায়িক সহিংসতা
যেকোন সংখ্যালঘুর উপর হউক তা আমাদের কাম্য নয়।ইতিমধ্যে বাংলাদেশের বহু
সামাজিক,মানবিক মুসলিম সংগঠন এর প্রতিবাদ করেছে এবং জাপান বসবাসরত সকল
বাংলাদেশীও সাম্প্রদায়িক সহিংসতার বিপক্ষে।
বাংলাদেশী জাপানে বসবাসরত হিন্দু জনগোষ্ঠীর সাথে আমাদের সকলে সুসম্পর্ক আছে।এখানে
সর্বজনীন পূজা উদযাপন কমিটি আছে।যারা প্রতিবছরের মত পূজা উদযাপন করে থাকেন।কিন্তু
মানববন্ধনে বাংলাদেশী কমিউনিটির পরিচিত একজন ছাড়া তেমন কাউকে দেখা যায়নি।
এই ধরনের সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বিভিন্ন দেশে ঘটে থাকে যা আমাদের কারও
কাম্য নয়।বিভিন্ন দেশে কিছু উগ্রবাদী জনগন এই ধরনের ঘটনা সৃষ্টি করে।তাই বলে
ঢালাও ভাবে পুরু ইসলাম জাতিগোষ্ঠীকে বা তার ধর্মের সকলকে দায়ী করা বা তার
ধর্ম টেরর,ইসলাম টেরর বলা উচিত নয়।
টোকিওস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের সামনে মানব বন্ধন নামে স্লোগানে "ইসলাম - টেরর"
বলে বিশ্বের সকল মুসলিম জাতি ও জনগোষ্ঠীকে অপমান করা হয়েছে। আমি এর
তীব্রনিন্দা ও প্রতিবাদ যানাই।
বাংলাদেশে যেমন হিন্দু সংখ্যালঘু অপর দিকে ভারতে কিন্তু মুসলিম সংখ্যালঘু।
ভারতে উগ্রবাদী হিন্দু জনগোষ্ঠী দ্বারা নির্যাতনের কিছু পরিসংখ্যান তুলে
দেওয়া হল।ভারতে ১৯৫৪ সাল থেকে ১৯৮২ সালের মধ্যে হিন্দু-মুসলিম
সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় প্রায় ১০,০০০ মুসলিমকে হত্যা করা হয়েছেন।১৯৮৩
সালে আসাম রাজ্যে নেলি গনহত্যার ঘটনা ঘটে। নেলি নামে একটি গ্রামে বাঙালি
বংশোদ্ভূত প্রায় ১,৮০০ মুসলমানকে লালুং উপজাতির লোকেরা (তিওয়া নামেও
পরিচিত) হত্যা করেছিল।২০০২ হিন্দু উগ্রবাদীরা মুসলিম সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর
বিরুদ্ধে সহিংসতা চালিয়েছিল।এই ঘটনার সময়, অল্প বয়সী মেয়েদের যৌন
নির্যাতন করা হয়েছিল, পোড়ানো বা কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছিল।এই ধর্ষণগুলি
ক্ষমতাসীন বিজেপি দ্বারা ক্ষমা করা হয়েছিল।সরকারী হিসেব অনুসারে ৭৯০ জন
মুসলিমকে হত্যা করা হয়েছিল।২০১৩ সালে আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে উত্তর
প্রদেশ রাজ্যের মুজাফফরনগর জেলায় হিন্দু ও মুসলমান দুটি প্রধান ধর্মীয়
সম্প্রদায়গুলির মধ্যে দ্বন্দ্ব ঘটেছিল।এই দাঙ্গায় ৪২ জন মুসলিমকে হত্যা করা
হয়েছিল।২০২০ সালে দিল্লির দাঙ্গা যার ফলে ৫৩ জন মুসলিমকে হত্যা করা হয়েছিল।ভারতে
হিন্দু জনগোষ্ঠি দ্বারা সংখ্যালঘু মুসলিম হত্যা কান্ঠের হাজারও ঘটনা আছে।ভারতে
মুসলিম সংখ্যালঘুর উপর নির্যাতন করে হিন্দু জনগোষ্ঠীর সমর্থন পাওয়া চেষ্টা
করে।বাংলাদেশেও তেমন সংখ্যালঘু হিন্দু জনগোষ্ঠীর সমর্থন হওয়ার আশা এসব ঘটে
বলে মনে করি।যা একান্তই রাজনীতিক খেলা বলা হয়।হিন্দুদের নির্যাতন করলেও লাভ
আবার চলে গেলেও লাভ।কারন তারা থাকলে একদল তাদের ভোট পায় আবার চলে গেলে
তাদের সম্পদ দখল করেন। নিরাপত্তা দিতে সরকার ব্যর্থ পরিচয় দিয়েছে।অপরাধী
যেই হউক তাকে আইনের আওয়াতায় আনা উচিত।ধর্ম যার যার নিরাপত্তা পাবার অধিকার
সবার।ভারতে যখন সংখ্যালঘু মুসলিম জনগোষ্ঠীর উপর নির্যাতন করা হয় তখন তো কোন
হিন্দু জনগোষ্ঠীকে বা বাংলাদেশের কোন হিন্দু জনগোষ্ঠীকে বা কোন হিন্দু
সংগঠনকে প্রতিবাদ করতে দেখা যায় না।ব্যতিক্রম শুধু বাংলাদেশে আমরা সর্বদা
এসব সাম্প্রদায়িক সহিংসতার বিপক্ষে।এসব সাম্প্রদায়িক সহিংসতা যেকোন
সংখ্যালঘুর উপর হউক তা আমাদের কার কাম্য নয়।আল্লাহু তাওয়ালা আমাদের সকলকে
বুঝেশুনে ধর্ম পালন করার তৌফিক দান করুক এবং অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের
সঠিক পথ দান করুক।আমিন।
WARNING:
Any unauthorized use or reproduction of 'Community' content
is strictly prohibited and constitutes copyright infringement liable to
legal action.
[প্রথমপাতা] |