|
জাপানে দুর্গাপূজা ২০২১ পালিত
কমিউনিটি রিপোর্ট ।।
অক্টোবর ১১, ২০২১ ।।
দুর্গাপূজা বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব। এ পূজা শুধু বাঙালি
হিন্দুদের ভেতরই সীমাবদ্ধ নয়। সম্প্রদায়ের গণ্ডি পেরিয়ে দুর্গোৎসব আজ জাতীয়
উৎসবে পরিণত হয়েছে। এ দুর্গোৎসবকে ঘিরে সকলের মধ্যে গড়ে উঠে এক
সৌহার্দ্য-প্রীতি ও মৈত্রীর বন্ধন।
করোনাভাইরাসের কারণে সনাতন হিন্দুধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব “শারদীয়
দুর্গাপূজা” এবছর উৎসব ছাড়াই পালন করেছে জাপানে বসবাসরত হিন্দুধর্মালম্বীরা ।
১০ অক্টোবর রোববার ( সাপ্তাহিক ছুটির দিন ) সকাল ১১ টায় দুর্গা পূজা শুরু হয়ে
সন্ধ্যা ৭ টায় প্রতিমা প্রতীকী বিসর্জনের মধ্য দিয়ে দুর্গাপূজার সমাপ্তি হয় ।
সকাল ১১ টা থেকে পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হলেও বেলা ২.৩০-এ অঞ্জলী দেয়া হয় ।
প্রতিবছর অঞ্জলী দেওয়ার পর পূজার প্রসাদ বিতরনের মধ্য দিয়ে তা পরিপূর্ণতা পেলেও
এবছর বিধিনিষেধ এর কারনে প্রসাদ বিতরন করা হয়নি । তবে, পুজা শেষে অতিথিদের ফল
বিতরণ করা হয় । পূজায় পুরোহিতের দায়িত্ব পালন করে শ্রী অমিতাভ ভট্ট্যাচার্য ।
জাপানে করোনাকালীন সময়ে ঘরোয়া আয়োজনে জাপান স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক
স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার জন্য বেশ কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করে । ধর্মীয় আয়োজনও
তার বাইরে নয়। এই সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে আলোকসজ্জা, সাজসজ্জাসহ উৎসব সংশ্নিষ্ট
বিষয়গুলো পরিহার করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবারের পূজাকে সাত্ত্বিক পূজায়
সীমাবদ্ধ রাখার কথা ঘোষণা দেয়া হয় সার্বজনীন পূজা কমিটি জাপান এর পক্ষ থেকে ।
তাই, এবারের দুর্গোৎসবকে কেবল দুর্গাপূজা হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে । সীমিত রাখা
হয় অনেক আনুষ্ঠানিকতা । যার মধ্যে, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটি অন্যতম ।
জাপানে সার্বজনীন পূজা কমিটি জাপান আয়োজিত এবারের দুর্গা পুজা পালনের আয়োজনটি
ছিল কেবলই ধারাবাহিকতা রক্ষা এবং শুধু মাত্র ধর্মীয় আচার পালনের জন্য ।
দুর্গোৎসব না করে পালন করা হয়েছে ঘট পূজা ।
বাংলাদেশে দুর্গাপূজা ৫ দিন ধরে হলেও বিভিন্ন কারণে জাপানে একদিনে সমস্ত আচার
পালন করার মাধ্যমে নিকটবর্তী রোববার দিন পালিত হয়ে থাকে। তবে একদিনে পালন করা
হলেও উৎসাহ-উদ্দীপনার কমতি থাকে না। যদিও এবছর তেমনটি পরিলক্ষিত হয় নি।
পুজায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রথম সচিব আরিফ মোহাম্মদ ।
এক শুভেচ্ছা বক্তব্যে তিনি বলেন, “শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে আমি বাংলাদেশসহ
জাপানে বসবাসরত হিন্দু সম্প্রদায়ের পুজা উদযাপন কমিটি , পৃষ্ঠপোষক এবং আগত
অতিথিদের সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই । বাঙালি হিন্দুদের প্রধান
ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। সমাজে অন্যায়, অবিচার, অশুভ ও অসুরশক্তি দমনের মাধ্যমে
শান্তিপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এ পূজা হয়ে থাকে। আবহমানকাল ধরে এ দেশের হিন্দু
সম্প্রদায় বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা ও উৎসবমুখর পরিবেশে নানা উপচার ও অনুষ্ঠানাদির
মাধ্যমে দুর্গাপূজা পালন করে আসছে। এ উৎসব সর্বজনীন।
বাঙালির হাজার বছরের ঐতিহ্য সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধন অটুট রেখে ধর্ম-বর্ণ
নির্বিশেষে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি,
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করতে
সক্ষম হব।”
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ঐতিহ্য অক্ষুণ্ন রেখে জাতীয় উন্নয়নে সবাইকে নিজ নিজ
অবস্থান থেকে অবদান রাখার আহ্বান জানিয়ে আরিফ মোহাম্মদ বলেন, “দুর্গোৎসব
ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার মধ্যে সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যের বন্ধনকে আরও সুসংহত
করুক-এ কামনা করি।”
তিনি বলেন , মানবতার ধর্মই সবচেয়ে বড় ধর্ম ।
প্রতি বছর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষ হলে ঢাকের শব্দে ধুনচি ধুনট হাতে নৃত্যের
তালে তালে চলে নাচ শেষে আরতি, সিঁদুর খেলা, মিষ্টিমুখ ও আলিঙ্গন এবং সবশেষে
প্রতিমা প্রতীকী বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ পূজার সকল আনুষ্ঠানিকতার সমাপ্তি হলেও
এবছর বৈশ্বিক মহামারী এবং সমাজের সব অনাচার দূর করে সর্বত্র শান্তির বার্তা নিয়ে
আসার কামনা করে প্রতীকী বিসর্জনের মধ্য দিয়ে দুর্গাপূজার সমাপ্তি হয় ।
টোকিওর কিতা সিটি ‘কিতা কুরিতসু উকিমা কুমিন সেন্টার’-এ সার্বজনীন পূজা কমিটি
জাপান’র এবারের আয়োজনটি ছিল ২৬তম।
WARNING:
Any unauthorized use or reproduction of 'Community' content
is strictly prohibited and constitutes copyright infringement liable to
legal action.
[প্রথমপাতা] |
|