|
প্রবাসী বাংলাদেশীর পরিচালনায় জাপানে “বঙ্গবাজার” নামে হালাল ফুড সুপার
মার্কেট এর যাত্রা শুরু
কমিউনিটি রিপোর্ট ।। মার্চ
২২, ২০২০ ।।
প্রবাসী বাংলাদেশীর পরিচালনায় জাপানে “বঙ্গবাজার” নামে হালাল ফু্ট-এর একটি
সুপার মার্কেট এর যাত্রা শুরু করেছে।
জাপান প্রবাসীদের অতি পরিচিত এবং প্রিয় মুখ, একজন সফল ব্যবসায়ী, পদ্মা কো,
লিমিটেড এর কর্নাধার বাদল চাকলাদার এর হাত ধরে রাজধানী অতি সন্নিকটে সাইতামা
প্রদেশের মিসাতো শহরে ‘বঙ্গবাজার’ এর যাত্রা শুরু করা হয়েছে।
২০ মার্চ ‘২০ শুক্রবার আনন্দঘন ও উৎসবমুখর পরিবেশে এশিয়ান পিপলস ফ্রেন্ডশিপ
সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা কাতসুও ইয়োশিনারি , জাপানের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী তাকাহারা
মিসাতো , সুরুতা কাযুয়ুকি এবং বঙ্গবাজার এর কর্ণাধার বাদল চাকলাদার ফিতা কেটে
প্রতিষ্ঠানটির শুভ উদ্বোধন করেন। তার আগে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটির সাফল্য ও সমৃদ্ধি
এবং বর্তমান বিশ্বে চলমান পরিস্থিতি থেকে পরিত্রান চেয়ে মিলাদ ও দোয়া কামনা করা
হয়।
বর্তমান জাপানে করোনা ভাইরাস ‘কোভিড ১৯’ ব্যাপক বিস্তৃতি সত্বেও দলমত নির্বিশেষে
সর্বস্তরের বিপুল সংখ্যক প্রবাসীদের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি এবং দিনব্যাপী
আনাগোনা এলাকাটিতে বাংলাদেশীদের উৎসবমুখর হয়ে ওঠে। যেহেতু ২,৯৭০ বর্গমিটার আয়তন
বিশিষ্ট পদ্মা কোম্পানির নিজস্ব জায়গাতে বঙ্গবাজার প্রতিষ্ঠিত ,তাই জাপানে
একটুকরো বাংলাদেশ বললে ভুল বলা হবে না।
উদ্বোধনর পূর্ব থেকেই ক্রেতাদের ভীর লেগে যায়। ক্রেতাদের ভীর সামলাতে হিমসিম
খেতে হয় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মীদের । স্বাগত জানানো হয় লাল গোলাপ-এর শুভেচ্ছার
মাধ্যমে। প্থম দিন-ই প্রায় ২,০০০ সংখ্যক ক্রেতা তাদের পছন্দের পণ্যগুলো কিনতে
সক্ষম হয়েছেন। যদিও এর কয়েক গুন বেশী সংখ্যকের পদচারনা পড়েছিল প্রথম দিনটিতে।
বঙ্গবাজার ছাড়াও বাদল চাকলাদার ‘বঙ্গ কারি’ নামে বঙ্গবাজার সংলগ্ন ইতোমধ্যে আরো
একটি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেছেন। একই শহরে বাদল চাকলাদার এর ‘পদ্মা কো,
লিমিটেড নামে হালাল ফুড এর হোলসেল প্রতিষ্ঠান রয়েছে। যেখান থেকে সারা জাপান
ব্যাপী হালাল ফুড সরবরাহ হয়ে থাকে।
উদ্যোক্তা বাদল চাকলাদার বঙ্গবাজার প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য জানিয়ে বলেন, জাপানে
বর্তমানে দিনদিন বেড়ে চলেছে। কিন্তু চাহিদা তুলনায় হালাল খাবার পর্যাপ্ত এবং
সহজলভ্য নয়। বাংলাদেশ , ভারত , পাকিস্তান ,ইন্দোনেশিয়া , মালয়েশিয়া,
মধ্যপ্রাচ্য সহ ল্যাটিন আমেরিকা , আফ্রিকা ও এশিয়ার অন্যান্য মুসলিম দেশগুলো
থেকে আগত প্রবাসীরা জাপানে হালাল ফুড সমস্যায় পড়েন । এছাড়াও জাপানে হালালফুড এর
রয়েছে প্রচুর চাহিদা ও সম্ভাবনা। সেই চিন্তা থেকেই জাপানে হালাল ব্যবসা শুরু করা।
ভবিষ্যত পরিকল্পনা জানিয়ে বাদল চাকলাদার জানান, বর্তমানে বসবাসরত মিসাতো শহর সহ
বাংলাদেশী খাদ্য সহ মুসলিম খাদ্য সংস্কৃতিকে জাপান ব্যাপী ছড়িয়ে দেয়াই আমার
স্বপ্ন।
উল্লেখ্য, আশির দশকের শেষদিকে ফুপাতো ভাই ফারুকের কথায় সাতপাঁচ না ভেবে ১৯৮৭
সালের প্রথমদিকে জাপান পাড়ি জমান বাদল। মুন্সীগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান উপজেলার
জৈনসার ইউনিয়নের শাসনগাঁও গ্রামে বাদল চাকলাদারের জন্ম। বাবা রমিজ উদ্দিন
চাকলাদার, মা হাছিনা বানু। আট ভাইবোনের মধ্যে বাদল তৃতীয়।
১৯৯০ সালে জাপানের রাজধানী টোকিওর ক্যাসুশিকা-কুতে 'পদ্মা' নামে একটি বেস্তোরাঁ
খুলে বসেন। পড়াশোনার স্বার্থে রাজধানী ছেড়ে আইচি কেনের নাগোয়াতে গেলেও
রেস্তোরাঁটা বন্ধ করেননি । চালিয়ে যেতে থাকেন নিজস্ব লোক দিয়ে। ১৯৯১ সালে
পড়াশোনার পাট চুকিয়ে চলে আসেন টোকিওতে এবং হাল ধরেন নিজ প্রতিষ্ঠানের।
কানদা কাজুমি, জাপানি তরুণী। বাংলাদেশি খাবার খেতে প্রায়ই পদ্মায় আসতেন। পদ্মার
খাবারের প্রেম থেকে একপর্যায়ে পদ্মার মালিকের প্রেমে পড়ে যান মিস কানদা কাজুমি।
এভাবেই পরিণয়, পরে বিয়ে।
এই কানদা কাযুমির অনুপ্রেরণা বাদল চাকলাদার কে আজকের এই অবস্থানে পৌঁছানোয়
অবদান রেখেছে । স্বামীর ব্যবসায়ীক ব্যস্ততার সঙ্গী হন কানদা কাজুমিও। পদ্মা
কম্পানির অফিসিয়াল অনেক দায়িত্ব কাঁধে নেন বাংলাদেশী এই বঁধু। বর্তমানে এই
দম্পতি তিন পুত্র সন্তানের জনকজননী । তাদের বড় পুত্র অমি চাকলাদার শিক্ষা জীবন
শেষ করে পদ্মা কোম্পানিতে কর্মরত।
WARNING:
Any unauthorized use or reproduction of 'Community' content
is strictly prohibited and constitutes copyright infringement liable to
legal action.
[প্রথমপাতা] |
|