|
তড়িৎ সিদ্ধান্তে প্রবাসীদের টোকিওতে সেবায় রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা
দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন
কমিউনিটি রিপোর্ট ।। জুলাই ৯, ২০১৯ ।।
বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলোতে সেবা নিয়ে প্রবাসীদের অভিযোগের শেষ নেই। টোকিও
দূতাবাসও তার ব্যাতিক্রম নয়।
কিন্তু প্রয়োজনে নিয়মের বাইরে এসে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে সেবা দান করে প্রবাসীদের
আস্থা অর্জন করা যে সম্ভব তার নজির স্থাপন করলেন জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের
রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা। ৭ জুলাই রোববার দুতাবাসের কনসুলার বিভাগে নিজে দাড়িয়ে
তিনি এ সেবা দান করেন এবং দিক নির্দেশনা দেন।
২০০৪ সাল থেকে জাপান প্রবাসীদের দাবীর মুখে বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধান মন্ত্রী
বেগম খালেদা জিয়ার নির্দেশে পররাষ্ট্র মন্ত্রী মোরশেদ খান প্রবাসীদের সেবা
নেয়ার সুবিধার্থে মাসের প্রথম রোববার দূতাবাসের কনসুলার বিভাগ খোলা রাখার
সিদ্ধান্ত দেন। সেই থেকে টোকিওস্ত বাংলাদেশ দুতাবাস মাসের প্রথম রোববার
প্রবাসীদের খোলা রেখে বিভিন্ন সেবা প্রদান করে আসছে।
সেই হিসেবে ৭ জুলাই '১৯ রোববার দুতাবাস খোলা থাকে এবং যথারীতি প্রবাসীরা সেবা
সংগ্রহে দূতাবাসে যান। তবে , সংখ্যাটা ছিল অনেক বেশী। তিন শতাধিক এবং সেবা
প্রদান কারীদের সংখ্যা ছিল ৩/৪ জনের মতো এবং কাউন্টার ছিল মাত্র একটি । ঘোষণা
দেয়ার মনিটর ও কাজ করছিল না। স্বাভাবিক ভাবেই হিমশিম খেতে হচ্ছে সেবা
প্রদানকারীদের। সার্ভার এর ধীর গতির কারনে শিশুদের ছবি নিতে ৩০ মিনিট পর্যন্ত
সময় নিচ্ছিল অনেক ক্ষেত্রে।
এক পর্যায়ে সংকুলান না হয়ে প্রবাসীদের করিডোর পেড়িয়ে দূতাবাস চত্বরে অবস্থান
নিতে হয় অনেককেই । বৈরী আবহাওয়ার কারনে প্রবাসীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
বিশেষ করে নারী ও শিশুদের। ফরম পূরণ করার জন্য একটু শুকনো স্থান পেতে অনেককে
আবার সিঁড়ির নিচে গিয়ে লিখতে হয়েছে।
এমতাবস্থায় দুতালয় প্রধান ও প্রথম সচিব মোহাম্মদ আরিফ কে ফোন করে প্রবাসীদের
দুর্ভোগ লাঘবে ব্যাবস্থা নিতে অনুরোধ জানানো হয়। বঙ্গবন্ধু অডিটোরিয়াম খুলে দেয়া
সহ কর্মকর্তা বাড়ানো, বসার ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানানো হলে, দুতালয় প্রধান
রাষ্ট্রদূতের পরামর্শে সবগুলো দাবী মেনে নিয়ে তড়িৎ ব্যবস্থা নেন। খুলে দেয়া হয়
মূল ভবনের ওয়েটিং রুম, বঙ্গবন্ধু অডিটোরিয়াম,২য় তলায় নামাযের স্থান , ভিসা
প্রদানের কাউন্টার এবং কাউন্টার ও বাড়ানো হয়। ২টা পর্যন্ত দুতাবাস খোলা থাকার
কথা থাকলেও বিকেল পর্যন্ত সেবা প্রদান করা হয়।
এইদিন ২০১৬ সালে ১ জুলাই ঢাকার হোলি আর্টিজান-এ নারকীয় হত্যাকাণ্ডের বর্ষপালনে
পূর্ব নির্ধারিত একটি শোক সভায় সকল কর্মকর্তাদের অংশ নেয়ার কথা থাকলেও
পরিস্থিতির কারনে দুইজন কর্মকর্তা প্রবাসীদের সেবা দানে নিয়োগ থাকেন।
এক পর্যায়ে রাষ্ট্রদূত নিচে নেমে এসে পরিস্থিতি অনুধাবন করে নিজে কাউন্টারে
দাঁড়িয়ে সেবা প্রদান সহ দিক নির্দেশনা দেন এবং অন্যান্য কর্মকর্তাদের উদ্ভুদ্ধ
করেন। একে একে ইকোনমিক মিনিস্টার ডঃ সাহিদা আকতার, কাউন্সেলর ডঃ জিয়াউল ইসলাম,
প্রথম সচিব বেলাল হোসেন ,দুতালয় প্রধান ও প্রথম সচিব মোহাম্মদ আরিফ সহ অন্যান্য
কর্মকর্তা এবং সহকর্মীরা তাদের নির্ধারিত সময়ের বাহিরে অতিরিক্ত সময় কাজ করে
পরিস্থিতি সামাল দেন।
রাষ্ট্রদূতকে কাছে পেয়ে প্রবাসীরা তাদের দুর্ভোগের কথা ভুলে উল্টো রাষ্ট্রদূতের
প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে উঠেন। একজন রাষ্ট্রদূত কর্তৃক এই ব্যাপারে সেবা পাওয়াটা
ছিল প্রবাসীদের ধারনার বাইরে।
সেবা দেয়ার পাশাপাশি আগামীতে দুর্ভোগ লাঘবে বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়ার কথা জানান।
উদ্যোগ গুলোর মধ্যে ফ্রি ওয়াই ফাই ব্যাবহার , ফটোকপি মেশিন, ক্রেডিট কার্ড
ব্যবহার করার সুবিধা, ভেন্ডিং মেশিন এবং এ,টি,এম ব্যাবস্থা প্রধান। এই ব্যাপারে
জানতে চাইলে দুতালয় প্রধান ও প্রথম সচিব মোহাম্মদ আরিফ বলেন, আমরা অনেক উদ্যোগ
নিতে চাইলেও জাপান সরকার এবং স্থানীয় এলাকার বাধ্যবাধকতার কারনে অনেক কিছুই
সম্ভব হয়ে উঠেনা অথবা সময় লেগে যায়।
দুতালয় প্রধান ও প্রথম সচিব মোহাম্মদ আরিফ জানান ২০১৪ সালে এম,আর,পি শুরু করলে
তখন একটা চাপ পড়ে পাসপোর্ট –এর উপর। ঠিক পাঁচ বছর পর আবার একই পরিস্থিতি
মোকাবেলা করতে হচ্ছে। তাই , মান্যবর রাষ্ট্রদূতের পরামর্শে জুলাই মাস এবং আগস্ট
মাসে অতিরিক্ত হিসেবে আরও একটি রোববার দুতাবাসের কনসুলার বিভাগ খোলা রাখা হবে।
সেই হিসেবে আগামী ১৪ জুলাই রোববার এবং ১৮ আগস্ট রোববার দূতাবাসে প্রবাসীরা
তাদের প্রয়োজনীয় সেবা পাবেন। আর মাসের প্রথম রোববার তো থাকছেই।
দূতাবাস এর এমন সিদ্ধান্ত প্রবাসীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলে এবং সকলেই ভূয়সী
প্রশংসা করেন । এমন সিদ্ধান্ত আসলেই প্রশংসার দাবী রাখে দুতাবাস ।
WARNING:
Any unauthorized use
or reproduction of
'Community' content
is strictly prohibited
and constitutes
copyright infringement
liable to legal
action.
[প্রথমপাতা] |
|