|
বৃহত্তর খুলনা কমিউনিটি জাপান'র আয়োজনে নবান্ন উৎসব পালিত
কমিউনিটি রিপোর্ট ।। নভেম্বর ১৩, ২০১৮ ।।
জাপানের বৃহত্তর খুলনা কমিউনিটি'র আয়োজনে জাপানে প্রথমবারের মতো পালিত হয়েছে
'নবান্ন উৎসব ১৪২৫'।
১১ নভেম্বর টোকিওর অদূরে সাইতামা প্রদেশের সোকা সিটি সেজাকি কমিউনিটি
সেন্টার-এ আয়োজিত প্রথমবারের মতো ব্যাতিক্রম এ আয়োজনে জাপান প্রবাসীদের ঢল
নেমেছিল । পরিস্থিতি সামাল দিতে আয়োজকদের হিমসিম খেতে হয় । তারপরও আপ্যায়নে
কোন ত্রুটি ছিল না । বরং বেশ আন্তরিকতার সাথেই বিপুল সংখ্যক অতিথিকে
আপ্যায়িত করা হয় ।
প্রবাসীদের সাথে যোগ দিয়েছিলেন বাংলাদেশ দুতাবাসের ইকোনোমিক মিনিস্টার ডঃ
সাহিদা আকতার , কমার্স কাউন্সেলর মোঃ হাসান আরিফ , কাউন্সেলর (শ্রম) মোঃ
জাকির হোসেন সহ দূতাবাসের অন্যান্য কর্মচারী বৃন্দ ।
নবান্ন ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী শস্যৎসব । বাংলার
কৃষিজীবী সমাজে শস্য উৎপাদনের বিভিন্ন পর্যায়ে যে সকল আচার-অনুস্টান ও উৎসব
পালিত হয় , নবান্ন তার মধ্যে অন্যতম । জাপান প্রবাসীরা এপর্যন্ত বাংলাদেশের
বিভিন্ন জাতীয় দিবস ও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালন করে আসলেও এই উৎসবটি এখনো
পর্যন্ত কেউই পালন করার উদ্যোগ নেয়নি । যদিও পিঠা-পুলি বা পিঠা উৎসব নামে
বিভিন্ন উৎসব এর আয়োজন করা হয়েছিল ।
'নবান্ন শব্দের আভিধানিক অর্থ হচ্ছে 'নতুন অন্ন'। নতুন ধান থেকে উৎপাদিত
চালে প্রথম রান্না উপলক্ষ্যে আয়োজিত উৎসবই হচ্ছে নবান্ন উৎসব । আর অগ্রহায়ন
মাসে নতুন আমন ধানের চালে তৈরি বিভিন্ন পিঠা হচ্ছে নবান্ন উৎসবের অন্যতম
উপকরণ ।
তাই বৃহত্তর খুলনা কমিউনিটি আয়োজিত নবান্ন উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ ছিল পিঠা ।
১০ টি জেলার সমন্বয়ে বৃহত্তর খুলনার বিভিন্ন অঞ্চলের ভাবীদের হাতে তৈরি
হরেক রকম পিঠা প্রবাসীরা উপভোগ করেছেন বেশ ।
উৎসব মানেই বিনোদনের ব্যাবস্থা রাখা । সেই চিন্তা মাথায় রেখেই বিশেষ
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন কে আরও প্রাণবন্ত করে তুলে ।
গোলাম মাসুম জিকোর পরিকল্পনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটিতে যথেষ্ট মুনশীয়ানার
পরিচয় ছিল । অনুষ্ঠানের সমন্বয় হিসেবে কাজ করেছেন তফসির আহমেদ তুহিন ,
মোস্তাফিজুর রহমান জনি , জেসমিন সুলতানা কাকলি প্রমুখ ।
পুরো আয়োজনকে পাঁচটি পর্বে ভাগ করা হয়েছিল । এগুলো হচ্ছে উদ্বোধন , কবিতা
সন্ধ্যা , নবান্নের নৃত্যানন্দ , নবান্নের গীত সন্ধ্যা , এবং কনসার্ট । আর
এগুলোর উপস্থাপনার প্যানেলে ছিলেন জিকো , বহ্নি আহমেদ , ববিতা পোদ্দার ,
কাউসার হাসান লাইজু , শিলা আফরোজ , তনুশ্রী গোলদার বিশ্বাস প্রমুখ ।
বিশেষ সহযোগিতায় ছিল স্থানীয় প্রবাসী সাংস্কৃতিক সংগঠন স্বরলিপি ও উত্তরণ ।
গ্রাম বাংলার আবহে মঞ্চটি তৈরি করেছেন শিল্পী সজীব । সহযোগিতায় ছিলেন জিকো
, বিপ্লব , লাইজু , জনি প্রমুখ ।
অত্যন্ত মনোরম পরিবেশ ও উৎসব মুখর এমন একটি আয়োজনের বিঘ্ন ঘটায় গাড়ী পার্কিং
নিয়ে প্রবাসীদের অসচেনতা । দৃষ্টিকটু সত্বেও আয়োজকদের বারবার ঘোষণা দিতে
হয়েছে অবৈধ পার্কিং নিয়ে । পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছে যে , একপর্যায়ে
অনুষ্ঠান কিছুক্ষন বন্ধ রাখতে বাধ্য হন আয়োজকরা । জাপান পুলিশ এবং কমিউনিটি
সেন্টার কর্তৃপক্ষ থেকেও বারবার ঘোষণা দিতে হয়েছে । তারপর ও তাদের বিবেক
জাগ্রত হয়নি । অথচ তারা সবাই জাপানের ট্রাফিক আইন মেনেই লাইসেন্স নিয়েছেন ।
একটি অনুষ্ঠান আয়োজনে আয়োজকদের আন্তরিকতা , শ্রম , মেধা , অর্থ ও সময় ব্যয়
যে হয় তা বলা বাহুল্য । তারপর ও তারা করেন কেবল মাত্র প্রবাস জীবনে সামান্য
হলেও ক্লান্তি ভুলে দেশের সংস্কৃতিকে লালন আনন্দ উল্লাসে মেতে থাকার জন্য ।
সেই উদ্যোগ কতিপয় অসচেতন মানুষের জন্য ভেস্তে যাবে এটা কারোরই কাম্য নয় ।
বিষয়টি মনে রাখলেই কল্যাণ হবে । দেশের ও বদনাম হবে না । পরবর্তীতে হল পেতেও
সহজ হবে ।
WARNING:
Any unauthorized use or reproduction of 'Community' content is strictly
prohibited and constitutes copyright infringement liable to legal
action.
[প্রথমপাতা] |
|