|
মহান শহীদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২০১৮ পালিত
কমিউনিটি রিপোর্ট ।। ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১৮ ।।
যথাযোগ্য মর্যাদা, গভীর ভালোবাসা এবং বিনম্র ফুলেল শ্রদ্ধায় জাপান প্রবাসীরা
স্মরণ করেছে জাতির বীর, শ্রেষ্ঠ সন্তানদের , যারা ভাষার স্বীকৃতি আদায়ে ১৯৫২
সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকার রাজপথে অকাতরে বুকের তাজা রক্তের বিনিময়ে
বাংলামায়ের ভাষায় কথা বলার অধিকার আদায় করে এনে দিয়ে গিয়েছিলেন , বিশ্বে আজ যা
বাংলা ভাষা হিসেবে স্বীকৃত ।
প্রবাসীদের সাথে প্রভাতফেরিতে অংশ নিয়েছেন বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা,
দূতাবাস কর্মকর্তা এবং কর্মচারীবৃন্দ এবং স্থানীয় প্রশাসন তোশিমা সিটি করপোরেশন
এর প্রতিনিধি ডেপুটি মেয়র মিযুশিমা মাসাহিকো এবং সংশ্লিষ্ট অন্য কর্মকর্তাবৃন্দ।
২১ ফেব্রুয়ারি জাপানে সাপ্তাহিক কর্মদিবস হওয়া সত্ত্বেও তীব্র শীতকে উপেক্ষা করে
প্রবাসীদের ঢল নেমেছিল তোশিমা সিটি ইকেবুকুরোতে নির্মিত স্থায়ী শহীদ মিনার
প্রাঙ্গণে। ভাষা আন্দলনে আত্মত্যাগ কারীদের প্রতি শ্রদ্ধা কৃতজ্ঞতা এবং
দায়বদ্ধতা থেকে টোকিও শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে হাজির হয়েছিলেন সর্বস্তরের প্রবাসীরা।
বিদ্যালয়ে পাঠানোর পূর্বে অনেকেই আবার তাদের সন্তানদের শহীদ মিনারে নিয়ে আসেন
।
সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত এবং তোশিমা সিটি
কর্তৃপক্ষ কর্তৃক পূর্ব ঘোষিত ফুলেল শ্রদ্ধা জানানোর কথা থাকলেও সকাল ৬টার আগেই
দূর-দূরান্ত থেকে পুষ্পস্তবক এবং ব্যানার নিয়ে প্রবাসীরা হাজির হতে শুরু করেন
শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে।
সকাল ৭টা ২০ মিনিটে রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা , দুতাবাস কর্মকর্তাবৃন্দ এবং সকাল
৭টা ৩০ মিনিটে তোশিমা সিটি ডেপুটি মেয়র মাসাহিকো মিযুশিমা শহীদ মিনার চত্বরে
হাজির হন। সকাল ৭টা ৪০ মিনিটের পূর্ব নির্ধারিত সময়ে শহীদ মিনার বেদিতে
পুষ্পস্তবক অর্পণ করে দাঁড়িয়ে নীরবে শ্রদ্ধা জানান। এই সময় উত্তরণের খন্দকার
ফজলুল হক রতনের কণ্ঠের সাথে সুর মিলিয়ে উপস্থিত সকলে সমবেতভাবে 'আমার ভাইয়ের
রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি' গানটি পরিবেশন করেন। জাপানে শহীদ মিনার
প্রতিষ্ঠার পর থেকে উত্তরণ বরাবর ই এই দায়িত্বটি পালন করে আসছে ।
বাংলাদেশ রাষ্ট্র এবং স্থানীয় জাপান প্রশাসন কর্তৃক শ্রদ্ধ্বা জানানোর পর জাপান
প্রবাসীদের প্রথা অনুযায়ী ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ, জাপান শাখা পুষ্পার্ঘ্য
অর্পণ করেন। দলটির নেতৃত্ব দেন সভাপতি সালেহ মো. আরিফ এবং সাধারণ সম্পাদক
খন্দকার আসলাম হিরা। এরপর অন্যতম বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বিএনপি পুষ্পস্তবক অর্পণ
করেন। দলটির নেতৃত্ব দেন সাধারণ সম্পাদক মীর রেজাউল করিম রেজা।
এরপর জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ব্যবসায়ী, ধর্মীয়, শিশু
সংগঠন, আঞ্চলিক সংগঠনসমূহ , এনআরবি এবং পেশাজীবী সংগঠন পক্ষ থেকে একে একে ফুলেল
শ্রদ্ধার্ঘ্য জানানো হয়। বণিক সমিতির সভাপতি (বিসিসিআইজে) বাদল চাকলাদার
ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধিত্ব করেন। অনেকে আবার ব্যক্তিগতভাবে এবং কিছুসংখ্যক জাপানি
সুহৃদরাও ফুলের শ্রদ্ধা জানান। জাপান-বাংলা উভয় দেশের বেশ কিছু শিশু ফুলেল
শুভেচ্ছা জানায় যা , পূর্বসূরিদের প্রতি দায়বদ্ধ্বতার বহিরপ্রকাশ ।
প্রতিবছরের মতো এবার ও পরিচালনায় ছিলেন জুয়েল আহসান কামরুল।
এ ছাড়াও বাংলাদেশ দূতাবাস যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালন করে। রাষ্ট্রদূত
কর্তৃক দূতাবাস প্রাঙ্গণে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ,
জাতীয় সংগীত পরিবেশন, ভাষা শহীদদের স্মরণে ১ মিনিট নীরবতা পালন, তাদের বিদেহী
আত্মার মাগফেরাত কামনা ও বাংলাদেশের উত্তরোত্তর শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে
বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত এবং দিবসটির তাৎপর্যে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী,
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত বাণীসমূহ পাঠ,
রাষ্ট্রদূত কর্তৃক শুভেচ্ছা বক্তব্য সমবেত কণ্ঠে "আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো
একুশে ফেব্রুয়ারি" গান পরিবেশন , ভাষা আন্দোলন ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের
উপর প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন , মহান শহীদ দিবস এর ইতিহাস এবং বাংলাদেশ ও
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের তাৎপর্য সম্পর্কে আলোচনা, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা
দিবস উপলক্ষ্যে ইউনেস্কো করতিক প্রচারিত ভিডিও প্রদরশন এবং সবশেষে চা-চক্রের
মধ্য দিয়ে দূতাবাস আয়োজিত অনুষ্ঠানমালা শেষ হয়।
WARNING:
Any unauthorized use or reproduction of 'Community' content
is strictly prohibited and constitutes copyright infringement liable to
legal action.
[প্রথমপাতা] |
|