[প্রথমপাতা] |
প্রবাসীদের প্রাণের
মেলা টোকিও বৈশাখী মেলা
|
|
কমিউনিটি রিপোর্ট ।। এপ্রিল ১৮, ২০১১ ।।
সহমর্মিতা এবং জাপানের পুনর্গঠনে সহযোগিতার দৃপ্ত অংগীকারের মধ্যে দিয়ে
জাপান প্রবাসীরা পালন করেছেন তাদের প্রাণের উত্সব, বাংলা নববর্ষ উদযাপন
টোকিও বৈশাখী মেলা। জাপানের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় দ্বাদশ বৈশাখী মেলা
ও কারি ফেস্টিভালকে আয়োজনকরা ভূমিকম্প ও সুনামিতে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষদের
সহযোগিতার জন্য চ্যারিটির মাধ্যমে তহবিল সংগ্রহের প্রতি মননিবেশ করে। এ
জন্য অনুষ্ঠান একঘন্টা আগে শুরু করে একঘন্টা আগেই শেষ করা হয়।
মেলায় আগত দর্শক অতিথিদের কাছ থেকে মোট ৮২১,৬১৭ ইয়েন সংগৃহীত হয়। মেলা
আয়োজক কমিটি আরো প্রায় ২০০,০০০ ইয়েন যোগ করে মোট দশ লাখ ইয়েন
ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে দান করার ঘোষনা দেন। আগামী ২১শে এপ্রিল বেলা ২টায়
তোশিমা কু'র মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে পৌঁছানোর জন্য তোশিমা কু প্রধানের
কাছে হস্তান্তর করা হবে।
এবারের মেলায় বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনা হয়। ছোটদের অনুষ্ঠানটি তার
মধ্যে অন্যতম। বাচ্চাদের উত্সাহ দেবার জন্য প্রতিবছর মেলা কমিটি বিভিন্ন
স্পন্সরদের সহযোগিতায় উপহার দিয়ে থাকে। কিন্তু এবার সেই অর্থ এবং
অংশগ্রহনকারী বাচ্চাদের দানকৃত অর্থ ক্ষতিগ্রস্থদের সহায়তায় আয়োজক কমিটির
নিকট হস্তান্তর করা হয়। শিশুদের অনুষ্ঠানটি বরাবরের মত এবারও বেশ আকর্ষনীয়
ছিলো। নতুন নতুন শিশুরা অংশগ্রহন করে মেলাকে প্রাণবন্ত করে তোলে। তবে
বরাবরের মত এবারও শিশুদেরকে নিয়ে অভিভাবকরা কিছুটা দেরী করে মেলায় উপস্থিত
হন। ফয়ে আয়োজকদেরকে বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হয়। অভিভাবকগন কিছুটা
সচেতন হলে আয়োজকদের বিব্রতকর পরিস্থিতি এড়ানো সম্ভব হতো।
'আরাধনা' জাপানি নাচের অনুষ্ঠানটি অত্যান্ত উপভোগ্য ছিলো। অনুষ্ঠানে প্রধান
অতিথি ছিলেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এ কে এম মজিবুর রহমান ভূঁইয়া।
ব্যাস্ততার জন্য তোশিমা কু'র মেয়র কিছু সময়ের জন্য উপস্থিত ছিলেন। তার
প্রতিনিধি আকিরা কোজাওয়া'কে বিশেষ অতিথি হিসেবে সম্মানিত করা হয়। মেলায়
শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন এ কে এম মজিবুর রহমান ভূঁইয়া, মেয়র প্রতিনিধি আকিরা
কোজাওয়া এবং আয়োজক, সংগঠক জাপান বাংলাদেশ সোসাইটির প্রেসিডেন্ট ওত্সুবো
ওসামু। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন জুয়েল আহসান কামরুল এবং জাপানি ভাষায় মঞ্জু।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রথমে অংশ নেয় উত্তরণ বাংলাদেশ কালচারাল গ্রুপ এবং
তারপর স্বরলিপি কালচারাল একাডেমি। বরাবরের মত তারা দর্শকদেরকে প্রচুর আনন্দ
দিতে সক্ষম হন।
এবারের মেলায় দর্শকদের বিনোদনের জন্য বাংলাদেশ থেকে আমন্ত্রিত হয়ে আসার কথা
ছিলো ক্লোজআপ ওয়ান ২০০৮ এর লিজা এবং ক্লোজআপ তারকা মানিকের। কিন্তু
অনিবার্য কারণে তারা মেলায় অংশ নিতে পারেননি। তারা ব্যাস্ততার কারণে আসতে
পারেননি বলে জানানো হয়।
দ্বাদশ বৈশাখী মেলা ও কারি ফেস্টিভাল প্রাঙ্গন পরিচ্ছন্নতার দায়িত্ব একটি
প্রতিষ্ঠানের হাতে দেওয়ার করানে আয়োজকরা প্রশংসার দাবি রাখেন। কারণ
প্রতিবছর মেলা প্রাঙ্গন পরিষ্কার রাখা ছিলো একটি দুরুহ কাজ। তবে এবারও
মূল্য নিয়ন্ত্রনে কর্তৃপক্ষ সাফল্যের পরিচয় দিতে পারেননি। ৩টি টমেটো ৫০০
ইয়েন, ১টি পেয়ারা ৫০০ ইয়েন কিম্বা ১টি করোল্লা ২৫০ ইয়েনকে অনেকেই
মাত্রাতিরিক্ত বলে মনে করেছেন। যেখানে ৩০০ ইয়েনেই অনেক বেশি সংখ্যক টমেটো,
একই সাইজের ১টি করোল্লা ১০০~১৫০ ইয়েনে সাধারণ দোকানগুলিতেই মেলে। এছাড়া ৮
বছরের শিশুকে দিয়ে মেলায় ঘুরে ঘুরে বই বিক্রি করানোর বিষয়টি দৃষ্টিকটু
লেগেছে। বলা বাহুল্য প্রতিবছরই বইয়ের উচ্চমূল্য অব্যাহত রয়েছে।
এ ধরনের ২/১টি ছোটখাটো ঘটনা বাদ দিয়ে সার্বিক ভাবে টোকিও মেলা সুন্দর ও
সার্থক হয়েছে। আয়োজকদেরকে ধন্যবাদ।
[প্রথমপাতা] |
|