[প্রথমপাতা]
|
অনলাইন সাংবাদিকতা: খবরের কবর রচনার দিন শেষ
আল রাহমান
সংবাদ মাধ্যমের ভুবনে বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী নতুন জাগরণ সৃষ্টি করেছে
অনলাইন সাংবাদিকতা। সহজলভ্য তথ্যপ্রযুক্তি, জ্যামিতিক হারে (২, ৪, ৮...)
ইন্টারনেট ব্যবহার বৃদ্ধি, তাৎক্ষণিক খবর, বিদ্যুৎগতিতে আপডেটসহ
ক্রমবর্ধমান পাঠক-প্রত্যাশা পূরণের প্রতিযোগিতায় এগিয়ে যাওয়ায় এখন রমরমা
অবস্থা অনলাইন নিউজ পোর্টালগুলোর। ঈর্ষণীয় জনপ্রিয়তা একেকটি অনলাইনের।
অনলাইন শুধু মুহূর্তের সংবাদ মুহূর্তে দিচ্ছে না। পাশাপাশি জাতীয় দিবস,
রাজনীতি, অর্থনীতি-ব্যবসা, খেলাধুলা, মুক্তমত, শেয়ারবাজার, বিনোদন,
লাইফস্টাইল, আইন, ধর্ম, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সাহিত্য, শিশুসাহিত্য, ফিচার,
ধর্ম-দর্শন, বিজ্ঞান-প্রযুক্তি, সাফল্যগাথা-অর্জন সব বিষয়ে তথ্য-তত্ত্ব ও
গবেষণালব্ধ বিশেষ প্রতিবেদন, সাক্ষাৎকারও প্রকাশ করছে। বলা যায়,
প্রতিষ্ঠানগুলো দেশের যেমন অতন্দ্র প্রহরীর মতো ভূমিকা রাখছে ২৪ ঘণ্টা,
তেমনি দেশ গড়ার কাজেও নিরন্তর রাখছে ইতিবাচক ভূমিকা ।
বিডিনিউজ২৪.কম ও বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ওয়েব
পোর্টাল। ইতিমধ্যে শীর্ষনিউজসহ কয়েকটি বন্ধ হয়ে গেছে। পরীক্ষামূলক চলছে
প্রাইমখবর.কম’র কার্যক্রম। পাইপ লাইনে আছে আরো কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। এর বাইরে
বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বিভাগ, জেলা-উপজেলা পর্যায়ে ছোটকাগজের মতো ছোট
ছোট অনলাইন নিউজ পোর্টালও গড়ে উঠেছে।
চর্চার দিক থেকে বাংলাদেশে অনলাইন সাংবাদিকতার শিশুকালই বলা চলে, সবে সাত
পেরোলো। এ প্রসঙ্গে ভালো হয় ২০ ডিসেম্বর ২০১১ সালে প্রকাশিত
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম’র হেড অব নিউজ মাহমুদ মেননের ‘অনলাইন সংবাদমাধ্যম:
কিছু গোড়ার কথা’ শীর্ষক লেখাটির কিছু অংশ পাঠকের সামনে তুলে ধরতে পারলে।
চিরতরুণ এ সাংবাদিক লিখেছেন, ‘‘অনলাইন সাংবাদিকতা। কথাটি প্রথম যেদিন শুনি
সেদিন তথ্যপ্রযুক্তিতে দৌড় ছিল ইন্টারনেট ব্রাউজিং, ইমেইল চেক করা ও পাঠানো
আর কম্পিউটারে লিখতে পড়তে পারা। বিশ্ববিদ্যালয়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতায়
পড়তে গিয়ে ইলেকট্রনিক জার্নালিজম কোর্সটিও খুব আগ্রহভরে পড়েছিলাম। কিন্তু
১৯৯৪ ব্যাচে আমরা যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে
সাংবাদিকতার শিক্ষায় অনলাইন জার্নালিজম যুক্ত হয়নি।
দিনটি মনে আছে ২১ আগস্ট ২০০৪। সাংবাদিকতার একটি কর্মশালায় প্রশিক্ষক হিসেবে
ছিলাম আমরা তিনজন। জাহিদ নেওয়াজ খান জুয়েল, মাসরুর জামান রনি ও আমি। দুপুর
নাগাদ প্রশিক্ষণ কর্মসূচি শেষ করে তিনজনই ধানমন্ডি এলাকায় একটি ফাস্টফুড
শপে বসেছি। আলোচনা হচ্ছিলো... একটি অনলাইন নিউজ এজেন্সি হচ্ছে তা নিয়ে।
জুয়েল ভাই এরই মধ্যে প্রক্রিয়াটির সঙ্গে সম্পৃক্ত। আমি ও রনি ভাই সেটিতে
চাইলে কাজ করতে পারি। অনলাইন সাংবাদিকতার কথা সেই প্রথম শোনা। কী হবে? কেমন
হবে? তা নিয়ে আলোচনা এগোচ্ছিলো। এমন সময় জুয়েল ভাইয়ের মোবাইল ফোনটি বেজে
উঠলো। ফোন ধরে তিনি কিছু একটা শুনে বললেন, সর্বনাশ! এরপর ফোনে দ্রুত কিছু
পরামর্শ দিলেন। বুঝে নিলাম বড় কোনো একটি সহিংস ঘটনা ঘটেছে। ফোন রেখে
জানালেন, কলটি এসেছিলো ফরিদ আহমেদ সাজুর কাছ থেকে। সে জানিয়েছে বঙ্গবন্ধু
এভিনিউতে আওয়ামী লীগের জনসভায় গ্রেনেড হামলা হয়েছে। ব্যাপক হতাহতের আশঙ্কা।
পরে কথা হবে বলে দ্রুত খাবার রেখেই বের হয়ে গেলেন জুয়েল ভাই। তিনি তখন
বার্তাসংস্থা ইউএনবিতে কর্মরত। দ্রুত ছুটে গেলেন অফিসের উদ্দেশে।
এরপর বোমা হামলার ডামাডোলে কিছুদিন কেটে গেলেও ওইদিনের সংক্ষিপ্ত আলোচনাটি
পরিণতি পেলো সেপ্টেম্বরে এবং উপরে উল্লেখিত আমরা চারজনই যোগ দিলাম দেশের
প্রথম অনলাইন সংবাদমাধ্যম বিডিনিউজ২৪.কম-এ। যার স্বপ্নদ্রষ্টা, প্রতিষ্ঠাতা
ও প্রধান সম্পাদক আলমগীর হোসেন। বাংলাদেশের সাংবাদিকতা জগতে যার পরিচিতি
সবচেয়ে আধুনিকমনস্ক, টেক হেভি নেটিজেন হিসেবে।
২০০৪ সালের সেই সেপ্টেম্বরেই যাত্রা শুরু করে বিডিনিউজ২৪.কম। আলমগীর
হোসেনের যেন এক যুদ্ধজয়ের সংকল্প। আর তার সঙ্গে সম্পাদক হিসেবে যোগ দিলেন,
সে সময়ের ডাকসাইটে রিপোর্টার রাশেদ চৌধুরী (বর্তমানে ব্রিটেনে বাংলাদেশ
হাইকমিশনের প্রেস মিনিস্টার), বার্তা সম্পাদক ছিলেন এনামুল হক চৌধুরী,
বাসস, রয়টার্সসহ বিভিন্ন সংবাদ সংস্থায় যার ছিলো দীর্ঘ অভিজ্ঞতা (বর্তমানে
নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রেস মিনিস্টার), ম্যানেজিং এডিটর ছিলেন
সোহেল মনজুর, অ্যাডভাইজরি এডিটর ছিলেন দীর্ঘ অভিজ্ঞতাসম্পন্ন জয়নাল আবেদীন,
কপি এডিটর নজরুল ইসলাম, চিফ রিপোর্টারের দায়িত্ব নিলেন সে সময়ের করিৎকর্মা
ও যোগ্য রিপোর্টারদের অন্যতম জাহিদ নেওয়াজ খান জুয়েল। বেসরকারি সংস্থায়
যুক্ত থাকায় সে সময় বিডিনিউজের সঙ্গে আমার ও মাসরুর জামান রনির সম্পৃক্ততা
ছিলো খণ্ডকালীন। কপি এডিটর হিসেবে আমরাও মানসিকভাবে ছিলাম পুরোপুরি
সম্পৃক্ত।...
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে, এই ছোট্ট অথচ অত্যন্ত কার্যকর একটি কর্মীদল
দিয়ে অসাধ্য সাধন করেন এডিটর ইন চিফ আলমগীর হোসেন। মাত্র এক বছরেই বিডিনিউজ
দেশে বিদেশে পরিচিতি পায়। এক্সক্লুসিভ, স্পেশাল রিপোর্ট প্রকাশের মধ্য দিয়ে
অর্জন করে আকাশসমান জনপ্রিয়তা। দ্রুত ও সঠিক খবর প্রকাশের মাধ্যমে
সংবাদপত্র ও টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর জন্য দ্রুত খবর পাওয়ার সবচেয়ে
নির্ভরযোগ্য উৎস হয়ে ওঠে বিডিনিউজ২৪.কম।
অনলাইন জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করলেও এমন একটি সংবাদ মাধ্যম পরিচালনায়
প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহ ছিলো দুরূহ কাজ। তখনও ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলো
অনলাইনে বিজ্ঞাপন দিতে নারাজ ছিলো। ফলে নিজের দীর্ঘ সাংবাদিকতা জীবনে দেশে
ও দেশের বাইরে বেশ কিছু সংবাদমাধ্যমে কাজ করে কষ্টার্জিত অর্থ ব্যয় করে
প্রতিষ্ঠা করা বিডিনিউজ বেশি দিন চালিয়ে নেওয়া আলমগীর হোসেনের জন্য অসম্ভব
হয়ে পড়ে। একপর্যায়ে তিনি প্রতিষ্ঠানটি অন্যের মালিকানায় ছেড়ে দিতে বাধ্য
হন। তখন থেকেই বিডিনিউজ২৪.কম নতুন মালিকানায় চলছে। এটি ২০০৬ এর
সেপ্টেম্বরের ঘটনা।
এর চার বছর পর আলমগীর হোসেন ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে শুরু করেন নতুন
অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম। মাত্র ছয় মাসেই দেশে অনলাইন
সাংবাদিকতায় জনপ্রিয়তার শীর্ষে উঠে আসে বাংলানিউজ। আলমগীর হোসেনের যোগ্য
নেতৃত্বে বিশ্বজুড়ে বাংলা ভাষাভাষীসহ অনেকের কাছেই একটি প্রিয় অনলাইন নিউজ
পোর্টাল হয়ে উঠেছে বাংলানিউজ।’’
এখন সাধারণের চোখে দেখা অনলাইন সাংবাদিকতার কিছু দিক অনুসন্ধানের চেষ্টা
করব আমরা। এটা সন্দেহাতীতভাবে বলা যাবে বর্তমানের অন্যতম ফাস্ট মিডিয়া
অনলাইন মাধ্যম। যখনি ঘটনা তখনই পাঠকের কাছে পৌঁছে দিতে ২৪ ঘণ্টাই
সজাগ-সচেতন থাকেন অনলাইন সাংবাদিকেরা। সবসময় সচল তাদের মোবাইল, ক্যামেরা,
ল্যাপটপ-কম্পিউটার। সোর্স, প্রকৃত ঘটনা ও কর্তৃপক্ষের বক্তব্য নিয়েই অনলাইন
সাংবাদিকেরা দ্রুত প্রকাশ করে দেন খবর। হোক না প্রথমে ‘কী, কখন, কোথায়,
কীভাবে?’ শক্তিশালী টিমওয়ার্ক ও নিবিড় নজরদারির কারণে ইতিমধ্যে সংবাদে
যুক্ত হয়ে যায় ছবি। এরপর সারাক্ষণ আপডেট দিতে থাকেন ‘কেন?’সহ অন্যান্য
প্রাসঙ্গিক বিষয়-আশয়ের। সঙ্গে সঙ্গে সংবাদের কলেবর বাড়াতে থাকেন সংশ্লিষ্ট
বিশেষজ্ঞের মতামত, করণীয়, অতীত রেফারেন্স ইত্যাদি দিয়ে। এরপর ইন্টারনেট
ভুবনের সামাজিক যোগাযোগ সাইট ফেসবুক, টুইটার, হাইফাউভ, ব্লগ, ইমেল, বিভিন্ন
প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে ছড়িয়ে যায় সংবাদটির লিংক। অনেক সংবাদমাধ্যম ও তাদের
কর্মীর কাছে অনলাইন নিউজপোর্টাল বা বার্তা সংস্থাগুলো হচ্ছে নির্ভরযোগ্য
সোর্স। এ কথা অকপটে তারা স্বীকার করতেও কার্পণ্য করেন না।
অন্যান্য ফাস্ট মিডিয়ার মধ্যে রয়েছে রেডিও-টেলিভিশন ইত্যাদি। নির্দিষ্ট
সময়ের খবরের বাইরে ইদানীং টেলিভিশন পর্দায় বড় ঘটনা-দুর্ঘটনার শিরোনাম দেখি
‘ব্রেকিং নিউজ’, ‘এই মাত্র পাওয়া’ এবং স্ক্রলে। এর বাইরে আছে সংবাদের ভেতর
টেলিফোনে বা সরাসরি তাৎক্ষণিক খবর। সমস্যাটা হচ্ছে, বেতার-টেলিভিশনে
দর্শকের নিয়ন্ত্রণক্ষমতা নেই বললেই চলে। ইতারে ভেসে আসা শব্দতরঙ্গ বা
পর্দার ছবি তো আর নিজের মতো করে বারবার দেখা-শোনার সুযোগ দর্শক-শ্রোতার
থাকে না। আবার বিশ্বের অনেক দেশেই বাংলাদেশের চ্যানেল এখনো দেখা যাচ্ছে না।
এসব দেশের প্রবাসী বাঙালিদের তাজা খবরের জন্য স্বাভাবিকভাবেই নির্ভর করতে
হয় অনলাইন সংবাদ মাধ্যমের ওপর। পাশাপাশি দেশে বিদেশে বাসা-অফিস-মুঠোফোনে
যাদের ইন্টারনেট সংযোগ রয়েছে এমন মানুষ তো খবরটি ভালো করে জানতে চান,
সহকর্মী, সমব্যথী মানুষকে জানাতে চান। এ সুযোগটি একমাত্র রয়েছে অনলাইনে। আর
তাই বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে আছে অনলাইনের পাঠক। যা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক জরিপ
সংস্থার র্যাংকিংয়েও প্রতিফলিত হচ্ছে।
এখানে আরেকটি বিষয় বলে রাখা ভালো, অনলাইন হচ্ছে সবুজবান্ধব। রেডিও-টিভির
সংবাদে সময় বা সংবাদপত্রের জায়গা সংকট, বিজ্ঞাপনের চাপসহ নানা সীমাবদ্ধতা
রয়েছে। এ ক্ষেত্রে অনলাইনে রয়েছে অফুরন্ত স্পেস। খবরের পেছনের খবর,
প্রয়োজনীয় নথি, ছবি, এমনকি ভিডিও ক্লিপ তুলে ধরতে অনলাইনকে বিন্দুমাত্র
ভাবতে হয় না। এতে করে একদিকে সংবাদ হয়ে উঠছে তথ্যবহুল অন্যদিকে অর্জন করছে
পাঠকের আস্থা, বিশ্বাসযোগ্যতা।
আমার কর্মক্ষেত্র বন্দরনগরী চট্টগ্রাম। একটা সময় দেখেছিলাম, কোনো সংবাদ
সম্মেলন বা অনুষ্ঠানে বিশেষ কোনো সংবাদপত্র বা টেলিভিশনের সাংবাদিক এসেছেন
কি না খবর নিতেন আয়োজকেরা। পাল্টে গেছে সময়। এখন তারাই অনুষ্ঠান শুরু আগে
জানতে চান অনলাইন এসেছে কি না। আয়োজকদের শতভাগ বিশ্বাস অনলাইনের
সংবাদকর্মীরা এলে সংবাদটি প্রচার হবেই, তখন অন্যসব সংবাদপত্র বা টেলিভিশনের
নজর কাড়বে। দেশবাসী জানেন কর্পোরেট সাংবাদিকতার এ যুগে অনলাইন যে কাজটি
করেছে, তা হলো খবরের কবর রচনার ইতি টেনেছে।
সত্যিকার অর্থে অনলাইন নিউজপোর্টালগুলো এখন শুধু ২৪ ঘণ্টার কঠোর-কঠিন
সংবাদমাধ্যম হিসেবেই কাজ করছে না। এর বাইরে সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকেও নানা
উদ্যোগ-আয়োজন করছে, পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে। কখনো সাহিত্য আড্ডা, কখনো
শীতবস্ত্র বিতরণ, জলবায়ু সচেতনতা, গোলটেবিলসহ অনেক উদ্যোগ নিজেরাই করছে।
পাশাপাশি হাজারো আয়োজনে ‘অনলাইন পার্টনার’ হিসেবে অবদান রাখছে।
অনেকে সমালোচনা করেন, অনলাইনে দ্রুত সংবাদ তোলার প্রতিযোগিতার কারণে বানান,
বাক্য, ব্যাকরণগত ত্রুটি-বিচ্যুতি থেকে যায়। এটা অস্বীকার করার উপায় নেই।
চাঁদের কলঙ্কের মতো আর কি! এর ওপর অনলাইন যে দ্রুত সংবাদ দিচ্ছে, আপডেট
দিচ্ছে তার তুলনায় বানান-বাক্য ভুল হওয়াটা খুব বেশি ম্লান, অনুজ্জ্বল।
তারপরও দিন দিন প্রশিক্ষণ, নজরদারি, সচেতনতা ও অভিজ্ঞতার কারণে ভুল কমছে।
পরিস্থিতি অনেক উন্নত হয়েছে। এ প্রসঙ্গে আরেকটি কথা বলে রাখা ভালো,
ইন্টারনেটে এখনো বাংলা লেখার ব্যাপারে যথেষ্ট যন্ত্রণা পোহাতে হয়। বিশেষ
করে বিজয় থেকে ইউনিকোডে টেক্সট পরিবর্তনের ক্ষেত্রে। পাশাপাশি বাংলা বানান
নিয়ে নৈরাজ্যের বিষয়টি তো অনেক পুরোনো। সব মিলিয়ে শত প্রতিকূলতা, বাধার
পাহাড় ডিঙিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে মূলধারার অনলাইন নিউজপোর্টালগুলো।
একথাও নির্দ্বিধায় বলা যায়, আন্ডারগ্রাউন্ড পত্রিকার মতো কিছু ভুঁইফোড়
অনলাইন প্রতিষ্ঠান গজিয়ে উঠেছে। বিজ্ঞাপনের অভাবে যেখানে মূলধারার
অনলাইনগুলো কর্মীবাহিনীর বেতন-ভাতা, ক্যামেরা-ল্যাপটপ-যানবাহনসহ বিশাল
অঙ্কের ব্যয় নিয়ে চিন্তিত সেখানে ‘ঢাল নেই তলোয়ার নেই’ এমন ভুঁইফোড়
অনলাইনগুলো কপি-পেস্ট করছে মাত্র। এতে পাঠক যেমন বিভ্রান্ত হচ্ছেন তেমনি
অনলাইন সংবাদ মাধ্যমেরও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। এটা অশনিসংকেত, সময়
থাকতেই মূলোৎপাটন করা দরকার ধান্ধাবাজদের।
একথা অনস্বীকার্য এখনো রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা-সহযোগিতার ছিঁটেফোঁটাও দেখা
যাচ্ছে না অনলাইনের ক্ষেত্রে। রাষ্ট্রীয় ক্রোড়পত্র,
নিয়োগ-দরপত্র-সচেতনতামূলক বিজ্ঞাপন এখনো অনলাইন নিউজ পোর্টালে চোখে পড়ছে
না। আশার কথা হলো সরকার ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ার প্রত্যয়ে কাজ করছে,
ইতিমধ্যে বিভিন্ন ভর্তির আবেদন, নিবন্ধন, ফল প্রকাশসহ অনেক সাহসী পদক্ষেপ
নিয়েছে। হয়তো অনলাইন নিউজ পোর্টালে বিজ্ঞাপন দেওয়ার বিষয়টি নীতিনির্ধারকদের
নজর কাড়বে। অনলাইন নীতিমালার বিষয়ে সরকার উদ্যোগী হয়েছে, কিছু কিছু বিষয়ে
ভিন্নমত পোষণ করেছেন মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও অনলাইন নিউজ পোর্টালগুলোর
শুভাকাঙ্ক্ষীরা। আশা করি, সরকার বিবেচনা করে সঠিক সিদ্ধান্তই নেবেন।
জয় হোক অনলাইন সংবাদমাধ্যমের, জয় হোক তারুণ্যের।
WARNING:
Any unauthorized use
or reproduction of
'Community' content is
strictly prohibited
and constitutes
copyright infringement
liable to legal
action.
[প্রথমপাতা] |
|