[প্রথমপাতা]

 

 

 

 

 

 

চরম অবহেলায় পড়ে আছে অবিভক্ত স্বাধীন বাংলার ঐতিহাসিক পলাশীর যুদ্ধক্ষেত্র
 

 

দীপক রায়, ভারত

ঘুরে এলাম অবহেলায় পড়ে থাকা পলাশীর যুদ্ধক্ষেত্র। নদীয়া-মুর্শিদাবাদের একেবারে সীমান্তে ভাগীরথী নদীর পাড়ে এই পলাশীর আমবাগানেই হয়েছিল সিরাজ ও ক্লাইভের যুদ্ধ। বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজের পরাজয় হয়েছিল কিছু বিশ্বাসঘাতকের ষড়যন্ত্রে। কিন্তু সে তো ১৭৫৭ সালের কথা। আজ ২৫৫ বছর পরে সেই পলাশীর প্রান্তর কেন পড়ে আছে অবহেলায়, সেটা বোঝা দায়। কয়েকদিন আগে পলাশিতে যুব ফেডারেশনের জেলা সম্মেলনের নিউজ কভার করতে গিয়ে ঘুরে এলাম পলাশীর সেই প্রান্তর। পলাশী রেলষ্টেশন থেকে মোটরভ্যান বা বাসে ৫ কিমি দুরেই পলাশী মনুমেন্ট। মনুষ্যবসতি খুবই কম। তবে যাতায়াতের রাস্তা ও গাছগাছালি দেখে চোখ জুড়িয়ে যাবেই। একটি সরকারী অফিস, একটি চায়ের দোকান আর কয়েকটি দীন দরিদ্র মানুষের বাড়ি ছাড়া আর কিছু নেই ওখানে। যেখানে বাস থামে, সেখানটায় গোল করে প্রাচীর দিয়ে ঘেরা। মাঝে আছে একটা অল্প উচ্চতার স্মারক, যেটাকে বলে পলাশী মনুমেন্ট। তার একপাশে আছে সিরাজের একটা আবক্ষ মু্র্তি। বেশিরভাগ মানুষ এটুকু দেখেই চলে আসেন।
তবে এখানেই শেষ নয়, উৎসাহী মানুষ একটু চেষ্টা করলেই আরেকটি ভালো জিনিস দেখতে পাবেন। মনুমেন্ট থেকে ৩০০ মিটার দূরে ফাকা মাঠে, চাষের জমিতে আছে আরেকটি স্মারক। কিন্তু যাতায়াতের রাস্তা নেই। চাষের জমির আল ধরেই যেতে হবে সেখানে। সেখানে গিয়ে খারাপ লাগলো। পাটের জমির এক কোনে চরম অবহেলায় দাঁড়িয়ে আছে একটি স্মারক। ছোট ছোট তিনটি সৌধ পাশাপাশি, ঘেরা আছে প্রাচীর দিয়ে। সিরাজের বিশ্বস্ত সেনাপতি মোহনলাল সহ তিন জনের স্মৃতি সৌধ।
কিন্তু কেন এমন অবহেলা এগুলোর প্রতি বোঝা দায়। মুর্শিদাবাদের হাজারদুয়ারীতে বহু কিছু আছে। কিন্তু এখানে কেন কিছুই নেই? এখানে হাজারদুয়ারী থেকে যুদ্ধের কিছু স্মারক এনে সাজিয়ে তোলা যেতে পারে। তাহলে মানুষ জানতে পারে পলাশীকে। দেখতে পারে পলাশীকে। নইলে এভাবেই একদিন মানুষের স্মৃতির বাইরে চলে যাবে অবহেলার পলাশী, ঐতিহাসিক পলাশীর যুদ্ধক্ষেত্র। দেশপ্রেমিক বীর সেনানী মোহনলালদের স্মৃতিসৌধ। ভারত সরকারের এই বিষয়ে নজর দেওয়া দরকার।

 

 

WARNING: Any unauthorized use or reproduction of 'Community' content is strictly prohibited and constitutes copyright infringement liable to legal action.
 

[প্রথমপাতা]

 

লেখকের আগের লেখাঃ

>>পশ্চিমবঙ্গে মমতার সরকারের এক বছরঃ একটি প্রতিবেদন