[প্রথমপাতা] |
বারবেলা
গোলাম মাসুম (জিকো)
হাড়ের ভিতর অনুভব
করেছিলাম অসীম শূন্যতা
শিরার ভিতর অনুভব
করেছিলাম বহুপদী
হা-হা-কা-র
তখন বধ্যভূমিতে এক কাপ
চা পান করেছিলাম-তারপর
একটা সিগারেট, নেশাটা
তাজা হলো ...
পিত্তগলা গন্ধের ভিতর
নাক ডুবিয়ে খুঁজতে থাকি
বাবার শরীর, দেশের দলিল
এবং অপরিণত বাংলা আমার
রাক্ষুসে হানাদার ছোবল
হেনেছে মায়ের জরায়ু
থেকে জাতীয় সত্ত্বা
অবধি,
- রক্তের বানে ভেসেগেছে
মানচিত্র, দুর্ভিক্ষের
অশনী সংকেত, নির্বাক
স্বজন আর বেদনার প্রহর।
পার হয়ে গেছে তিনটি
যুগ
এখনও সন্ধান মেলেনি
বাবার, দেশের দলিল সেটা
তো আজ খেলনা বানানোর
কাগজ আর আমার বাংলা সেতো
কর্কটরোগে আক্রান্ত।
বাবার জীবনের বিনিময়ে
যে বাংলাকে পেয়েছি তা
কি গড়তে পেরেছি বাবার
স্বপ্নের মতো করে? নাকি
বাবার স্বপ্নও হচ্ছে
ধর্ষিত, নির্যাতিত, আহত,
অনাদৃত .... ছিঃ
আজ আমি বড়ই অসহায়,
দুর্বল এবং অধিক্ষিপ্ত
এখন বাকি শুধু
স্বপ্নগুলোকে নির্বাসিত
করা
স্বপ্নগুলোকে লালন করে
বৃথা কষ্ট পেয়ে কি লাভ?
আজ যখন দেশের কিনার
যেতেই লাশ হয়ে ফেরে
আমার বোন
জন সম্মুখে দোররা মেরে
লাঞ্ছিত করে গ্রাম থেকে
বের করে দেওয়া হয়
নারীকে
ডাক্তার যখন শিশুর
বৃক্ক অবলীলায় কেটে
বিক্রি করছে চোরবাজারে
তখন স্বপ্নগুলো বেজায়
কষ্টে থাকে, কাঁদে,
লজ্জা পায়।
১৯৭১ এর ত্যাগ, বিসর্জন
কিছুই মনে রাখছেনা এ
জাতি
এ এক কেমন ভিন্ন জাতিতে
পরিণীত হয়েছি
হত্যা, লুণ্ঠন, রাহাজানি,
চুরি, ধর্ষণ এ সমাজ কে
বিষিয়ে তুলেছে। কে
বাঁচাবে? কে পথ দেখাবে
এই জাতি কে?
সে দিন বধ্যভূমিতে
বাবার লাশ না পেয়ে
ভেবেছিলাম বাবা হয়তো
ফিরে আসবে একদিন
বাবা আজও ফেরেনি আর তাই
তোমাকে বলছি বাবা, যদি
শুনতে পাও আমাকে
তবে শোন, এসোনা তুমি
যেখানে আছো ভালো ভালোই
আছো
তোমার সেই বাংলা এখন
অকর্ষিত অঁচল
[প্রথমপাতা] |
|