প্রথমপাতা  

সাম্প্রতিক সংবাদ 

 স্বদেশ

আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশ কমিউনিটি

লাইফ স্টাইল

এক্সক্লুসিভ

বিনোদন

স্বাস্থ্য

বর্তমানের কথামালা

 শিল্প-সাহিত্য

 প্রবাসপঞ্জী 

আর্কাইভ

যোগাযোগ

 

 

 

 

 

ওকিনাওয়ার যুদ্ধ -৩: হতভাগ্য এক সৈন্যের অন্ধকার অধ্যায়

 

 


কমিউনিটি রিপোর্ট ।। জুন ২০, ২০১৫ ।।

ওকিনাওয়া যুদ্ধে পশ্চাৎপসারণকারী জাপানি সেনারা আহত সেনাদেরকে পিছু ফেলেই চলে যায়। এমন এক আহত সৈন্যের কন্যারা সম্প্রতি ওকিনাওয়াতে এসে সচক্ষে দেখে যান যেখানে তাদের পিতা জীবনের সবচেয়ে অন্ধকার দিন গুলো পার করেছেন।

তৎকালীন জাপানি ইম্পেরিয়াল আর্মির সেনা কাৎসুহিরো হিবিনো ওকিনাওয়া যুদ্ধে মৃত্যুর খুব কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিলেন। সে সময় ২৭০ মিটার লম্বা আবুচিরাগামা গুহাকে নিরন্তর যুদ্ধের ফিল্ড হাসপাতাল হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

৭০ বছর পর হিবিনো'র কন্যারা তাদের পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে স্থানটি সফর করছেন। ছয় বছর আগেই হিবিনো মারা যান। ১৯৪৫ সালের মে মাসে তাকে ওই গুহাটিতে আনা হয়। অগ্রগামী মার্কিন সেনাদের সাথে যুদ্ধে তিনি মারাত্মক ভাবে জখম হন। মার্কিন সেনারা অব্যাহত ভাবে অগ্রসর হতে থাকলে জাপানি সেনারা হিবিনো'কে গুহার ভেতর ফেলে রেখেই পিছু হটে যায়।

পরে স্থানীয় গ্রামবাসী তাকে আশ্রয় দেন, ক্ষুধার্থ হিবিনোকে গুহার ভেতর খাবার দিয়ে যান। গ্রামবাসীরা ইম্পেরিয়াল সেনাবাহিনীর উপর ক্ষুব্ধ ছিলো কারন তারা যুদ্ধে সাধারণ গ্রামবাসীকে মানব-ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছিলেন। তবে সৌভাগ্যক্রমে গ্রামবাসীরা তাকে করুণা করেছিলেন। তাকে ভাতের স্যুপ খেতে দেন এবং সুস্থ্য করে তোলেন।

"আমার মনে হয় তারা খুবই দয়ালু ছিলেন, যদিও তিনি ছিলেন একজন জাপানি সৈন্য" হিবিনো কন্যা হিরোকো হিবিনো বলেন। "সে সময় খাবার খুবই দুষ্প্রাপ্য ছিলো এবং তাদের খাবারের সন্ধান করতে রীতিমত সংগ্রাম করতে হতো।"

যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর হিবিনো তার মূল ভূখন্ডে ফিরে আসেন, কিন্তু তিনি ওকিনাওয়াতে শতাধিক বারেরও বেশি ফিরে যান। তার জীবন বাঁচানোর জন্যে তিনি গ্রামবাসীদেরকে ধন্যবাদ জানাতে চান।

হিবিনো বেঁচে থাকতে জনৈক গবেষক তার একটি সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন।

সেই সাক্ষাৎকারে তিনি উল্লেখ করেন গুহায় অসহায় অবস্থায় থাকতে থাকতে তিনি আশাহীন হয়ে পড়েন। জাপানি সেনাবাহিনী তাকে ফেলে যাওয়ার সময় চিকিৎসকরা তার হাতে ধরিয়ে দিয়েছিলেন এক প্যাকেট পটাশিয়াম সায়ানাইড, মারাত্মক এক বিষ। "চিকিৎসকরা আমাকে বলে আমি যদি এই পাউডার পানির সাথে মিশিয়ে পান করি তবে সহজেই মারা যাবো" তিনি বলেন "সে সময়ে, আমি এই জেনে খুশি হয়েছিলাম যে অন্ততঃ যন্ত্রনাহীন মৃত্যুর একটি উপায় রয়েছে"।

তবে তিনি মারা যাননি ওকিনাওয়ার জনগন তাকে সেই অন্ধকার থেকে উদ্ধার করেছিলেন। হিবিনো'র ভাষ্যমতে যুদ্ধ ১৯৪৫ সালের ২২ অগাষ্ট শেষ হয়। যুদ্ধ শেষে তিনি গুহা থেকে বেরিয়ে আসেন। "যখন আমি বাইরে বেরিয়ে আসি, দেখতে পাই সবুজ গাছপালা, এগুলো এতো চমৎকার, আশ্চর্যজনক এক অনুভূতি।"

হিবিনো কন্যা তার পিতার অভিজ্ঞতা থেকে এখন তার দায়িত্ব অনুভব করেন। "মশাল আমাদের কাছে দেয়া হয়েছে এখন আমাদেরকেই এই অভিজ্ঞতার কথা মানুষকে বলে শান্তির প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরতে হবে। আমাদেরকে নিশ্চিত করতে হবে যেন মশালটা ঠিক মতো পরের প্রজন্মের হাতে যায়। যদি আমরা তা ঠিক ভাবে করতে পারি, আমি আশা করি আর কখনো যুদ্ধ হবে না" হিবিনো'র আরেক কন্যা কেইকো নাকামুরা বলেন।

গুহার ভেতর জীবন বাঁচলো। অন্ধকার থেকে বেরিয়ে এলেন এক মানুষ আর তার গল্প বেঁচে রইলো। এনএইচকে।

 

 

WARNING: Any unauthorized use or reproduction of 'Community' content is strictly prohibited and constitutes copyright infringement liable to legal action.

[প্রথমপাতা]