মা,বাবা বেহেস্তী সম্পদ ছিলেন
মাখন কুদ্দুস
জান্নাতবাসী মা,বাবা ছিলেন সন্তানদের জন্য নিরাপত্তা ও ভালোবাসার এক
বেহেস্তী নেয়ামত যে জিনিসটা তখন মুল্যায়ন করতে পারি নাই যখন তারা আমাদের
সাথে সব সময় রক্ষাকবচের মত পাহারাদার ছিলেন। এতটা তাড়াতাড়ি চলে যাবে কখনও
সন্তানদের বুজতে দেওনি, বিনা নোটিশে অতি গোপনে সবাইকে ফেলে চিরদিনের জন্য
চলে গেলে,আর কখন ফিরে আসবে না।
তোমাদের জন্য এতটা কখনও কাঁদিনাই,যন্ত্রণা কষ্ট অনবরত মৃত্যু পর্যন্ত
উপহারসরূপ বহন করে চলতে হবে। তোমাদের শেষ দেখার সময় বাড়ানোর ইচ্ছাটুকু
তোমার নাতীরা আল্লাহর কাছে আপিল করা সত্বেও তা পুর্ন হল না। করুণ রোদনে
আমরা তিলেতিলে কতটা যে শেষ হচ্ছি, তা একবার হলেও এসে দয়া করে দেখে যাও না।
পংগু ছোট মেয়েটা সে কথা বলতে পারে না, তোমার কবরের কাছে বসে হাউমাউ করে
কি যে আর্তনাদ করছে তা শোনছো কি না। বিছানা নোংরা করে নষ্ট করতাম তুমি
সন্তানকে নতুন ভাল গরম পোষাক পড়িয়ে ভেজা পোষাকে ঘুমাতে কেঁদে উঠলে
পুনরায় জেগে উঠে তোমার কলিজার টুকরার সমস্ত শরীর পোস্টমরটেম করে কাঁদার
কারণটা খুঁজতে পিঁপড়াটা কোথায় কামড় দিল,কানে ডুকলো কিনা?
তোমার কোলে কতটা আদর করে জড়িয়ে রাখতে,সবার আগে ঘুম থেকে উঠে সকালের
নাস্তা তৈরী ও স্কুলে পাঠাবার কাজগুলি শেষ করে নীরবে ঘুম থেকে সন্তানদেরকে
জাগাতে,ছাতি ছিল না বৈরী আবহাওয়ার অনুকূলের একফাঁকে স্কুলে পাঠাতে যাতে করে
চলার পথে কোন রকম অসুবিধা না হয় তা দূরে দাড়িয়ে যতক্ষন পর্যন্ত তোমার
চোখের আড়াল না হতাম ততক্ষন অপেক্ষায় থাকতে। ঘড়ি ছিল না সূর্যের আলোর
গতিবিধি লক্ষ্য করে সমায়ের হিসাব কিভাবে বের করতে যে এ সমায় তোমার
সন্তান বাসায় ফিরে আসবে,তোমাকে খুঁজে বের করার আগেই তুমি বুকে জড়িয়ে
ধরতে।
অল্প সময়ের জন্য তোমাকে
খুঁজে না পেলে শান্তি পেতাম না বলে উচ্চকন্ঠে ডাকাডাকি গালাগালি কতই না
বিরক্ত করতাম ক্ষমা করে দিও। অত্যাধুনিক যোগাযোগ বিহীন যুগে কিভাবে
তোমার সন্তান অসুস্থ্য হলে টের পেতে,কোন সমস্যার সম্মুখীন হলে কিভাবে
জানতে?নানার বাড়ীতে বেড়াতে নিয়ে গিয়ে নাতীদের ভিড়ে খাবারের ঘাটতি হবার
আগেই আমার অংশ টুকু এনে তুমি না খেয়ে আমাকে আড়ালে খাওয়াতে।
নাড়ীর টানে তোমার কাছে
ছুটে গিয়েছি বহুবার সবাইর দাবী পরিপূর্ন করতে সক্ষম না হওয়ায় অপ্রিয়
হয়েছি বারংবার শুধু তোমাকে কখনও কোন অভিযোগ করতে দেখি নাই বরং সন্তানকে
বারবার বিভিন্ন ভাবে গোপনে দেখেছ তার শরীরের কোন অংশ খেসারত হয়েছে কিনা
তোমার সন্তানটি আগের মতন আছে কিনা? মা বিদেশে আমরা যারা আছি তারা দেশেও পর
বিদেশেও পর। শুধু তোমার কাছে কখনও পর ছিলাম না। আমাদের কষ্ট হলেও তোমাকে
কখনও অর্থের অভাবটা বুজতে দিতাম না। অত্যাধুনিক চিকিৎসা সেবার ব্যাবস্থা করা
সত্বেও তোমার পাশে থেকে তোমাকে কসাই ডাক্তারদের মতন কোন প্রকার সেবা করতে
পারি নাই। ক্ষমা করে দিও সন্তানদের। তোমাকে হাজার স্যালুট। তোমাকে
আল্লাহপাক জান্নাতুল ফেরদৌস দান করুন। আমিন।
WARNING:
Any unauthorized use or reproduction of 'Community' content
is strictly prohibited and constitutes copyright infringement liable to
legal action.
[প্রথমপাতা]
|