জাপানে ভালুকের আক্রমণ বাড়ছেঃ প্রতিরোধের সম্মুখভাগে রয়েছেন প্রবীণ শিকারীরা
কমিউনিটি রিপোর্ট ।।
সম্প্রতি উত্তর জাপানে সকালে একটি গুলির আওয়াজ ভেসে এসেছিলো। একটি বাদামী
ভালুককে খাঁচায় ভরা হয়েছে, যা দেখতে গুটি কয়েক শহর কর্মকর্তা এবং শিকারী
উপস্থিত ছিলেন।
ভালুকটি কাছের একটি বাড়ির চারিদিকে ঘোরাঘুরি করছিলো এবং পথে একটি ভুট্টার
ক্ষেত থেকে খাবার খাচ্ছিলো, তাই শিকারীরা সেখানে একটি মৃত হরিণ রেখে
প্রলুব্ধ করে পেটুক প্রাণীটিকে আটক করে।
"ভালুক ধরা পড়লেই আমি কিছুটা শান্ত অনুভব করি" হারুও ইকেগামি (৭৫) বলেন,
তিনি স্থানীয় শিকারী সমবায়ের প্রধান।
ভালুকের ক্রমবর্ধমান বংশবৃদ্ধি জাপানের জন্যে একটি মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে
দাঁড়িয়েছে। ক্রমহ্রস্বমান শিকারীদের প্রবীণ হয়ে ওঠার বিষয়টিও সম্মুখ কাতারে
চলে এসেছে।
মার্চ ২০২৪ সময় পর্যন্ত ১২ মাসে রেকর্ড ২১৯ জন ভালুকের হামলার শিকার হয়েছেন
যাদের মধ্যে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। অপরদিকে ৯ হাজারেরও বেশি কালো এবং বাদামী
ভালুককে এ সময়ে ফাঁদ পেতে ধরা হয়েছে ও পরে সেগুলিকে মেরে ফেলা হয়েছে বলে
জাপানের পরিবেশ মন্ত্রণালয় সূত্রে বলা হয়েছে।
দুই প্রজাতির ভালুকেরই বাসস্থান দিন দিন সম্প্রসারিত হচ্ছে, মন্ত্রণালয়ের
একটি পরিসংখ্যান উল্লেখ করেছে বাদামী ভালুক জাপানের উত্তরের দ্বীপ
হোক্কাইদো'তে ২০২০ সাল পর্যন্ত তিন দশকে দ্বিগুনেরও বেশি বেড়ে প্রায় ১১,৭০০টিতে
দাঁড়িয়েছে। জাপানের প্রধান দ্বীপ হনশু'তে প্রাপ্ত কালো ভালুকের কোনো
পরিসংখ্যান রাখা হয়নি। যদিও জাপানের ব্যাপক প্রচারিত দৈনিক ইয়োমিউরি
শিম্বুন ধারণা করছে ২০২৩ সাল পর্যন্ত কালো ভালুকের সংখ্যা ছিলো মোটামুটি
ভাবে ৪৪ হাজার, যা ২০১২ সাল থেকে তিনগুন বেড়ে গেছে।
জাপানের ফরেস্ট রিসার্চ অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অর্গানাইজেশনের মতে, শিকারের
উপর বিধিনিষেধ এবং সংরক্ষণের উপর বেশি জোর দেওয়ায় সাম্প্রতিক দশকগুলিতে
ভালুকের সংখ্যা বৃদ্ধিতে অবদান রেখেছে। জাপানের গ্রামীণ এলাকায় জনসংখ্যা
দ্রুত পতনের সম্মুখীন হওয়ায়, ভালুকরা শহর ও গ্রামের কাছাকাছি এবং
পরিত্যক্ত কৃষিভূমিতে প্রবেশ করছে, পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের একটি বিশেষজ্ঞ
প্যানেল ফেব্রুয়ারিতে বলেছে।
বিশেষজ্ঞ, শিকারি, কর্মকর্তা এবং বাসিন্দা সহ প্রায় দুই ডজন মানুষের সাথে
রয়টার্সের সাক্ষাৎকার অনুসারে, জনসংখ্যার বয়সের সাথে সাথে শিকারী
বসতিগুলিকে রক্ষা করতে বিনোদন শিকারীর কৌশল খুব একটি টেকসই বলে মনে হচ্ছে
না।
ভালুকের বংশ রক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ভালুক-মানুষ সংঘাত এড়ানোর কৌশল
বদলানোর আহ্বান জানাচ্ছেন অনেকেই।
হোক্কাইদো'র শহরগুলি যেমন সুনাগাওয়া, নায়ে, ইওয়ামিজাওয়া এবং তাকিকাওয়া
শহরে, যেগুলি রয়টার্স অক্টোবরে পরিদর্শন করেছিল, কিছু বাসিন্দারা ভাবছেন
কী হবে যখন শিকারীরা আর কাজ করতে পারবেন না।
সুনাগাওয়ার একজন ৬৬ বছর বয়সী মুরগির খামারি তোরু ইয়োশিনো বলেছেন যে তিনি
কয়েক বছর আগে তার খামারে একটি ভালুককে ঘুরে বেড়াতে দেখে "ভয় পেয়ে
গিয়েছিলেন"। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানাতে হবে তা বিবেচনা
করে, তারা শেষ পর্যন্ত হুমকিকে নিরপেক্ষ করার জন্য শিকারীদের সমিতি,
সুনাগাওয়া রিওয়ুকাইয়ের উপর নির্ভর করেছিল, তিনি বলেন। রয়টার্স।
WARNING:
Any unauthorized use or reproduction of 'Community' content
is strictly prohibited and constitutes copyright infringement liable to
legal action.
[প্রথমপাতা]
|