|
জাপানে দুর্গা পূজা পালিত
কমিউনিটি রিপোর্ট। অক্টবর ৯, ২০১৯।
দুর্গাপূজা বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব। এ পূজা শুধু
বাঙালি হিন্দুদের ভেতরই সীমাবদ্ধ নয়। সম্প্রদায়ের গণ্ডি পেরিয়ে দুর্গোৎসব
আজ জাতীয় উৎসবে পরিণত হয়েছে। এ দুর্গোৎসবকে ঘিরে সকলের মধ্যে গড়ে উঠে এক
সৌহার্দ্য-প্রীতি ও মৈত্রীর বন্ধন। মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর ভাষায় ধর্ম যার
যার উৎসব সবার।
৬ অক্টোবর রোববার জাপানে সাড়ম্বড়ে পালিত হয়েছে সনাতন হিন্দু ধর্মালম্বীদের
সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গা পূজা । দুর্গা পূজা পালন উপলক্ষে টোকিওর কিতা
সিটি তাকিনোগাওয়া কাইকান-এ সজ্জিত করা হয়েছিল অস্থায়ী পূজা মণ্ডপ । এবারের
আয়োজনটি ছিল ২৪তম।
অস্থায়ী এই পূজা মন্ডপে প্রবাসী বাঙ্গালীদের ঢল নেমে ছিল । শুধুমাত্র পূজারী
কিংবা সংশ্লিষ্টরাই যে গিয়েছিল তা কিন্তু নয়। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ
বাংলাদেশের ঐতিহ্য অনুযায়ী দল-মত-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সর্বস্তরের
প্রবাসীদের পদচারনায় মুখরিত ছিল পূজা মণ্ডপ । বিশেষ করে শিশুকিশোরদের আনন্দ
উল্লাস ছিল চোখে পড়ার মতো । কারন পূজায় আনন্দ করার বয়সটা যে ওদেরই ।
সকাল ১১ টা থেকে পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হলেও বেলা ২.৩০-এ অঞ্জলী দেওয়ার
পর পূজার প্রসাদ বিতরনের মধ্য দিয়ে তা পরিপূর্ণতা পায় । সন্ধ্যা পর্যন্ত এই
প্রসাদ বিতরণ অব্যাহত থাকে। এবারে পূজায় পুরোহিতের দায়িত্ব পালন করে শ্রী
অমিতাভ ভট্ট্যাচার্য ।
বেলা ৪টা থেকে শুরু হয় পূজা বিষয়ক ধর্মীয় আলোচনা পর্ব । এতে প্রধান অতিথী
হিসেবে রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমার উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও ,ব্যস্ততার কারনে
তিনি সকাল বেলা উপস্থিত হয়ে কিছুটা সময় কাটান এবং শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন।
শুভেচ্ছা বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত বলেন, দুর্গা পূজার সাথে মিশে আছে আবহমান
বাংলার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি। শুধু সনাতন ধর্মালম্বীরাই নন, ধর্ম বর্ণ
নির্বিশেষে সকল বাঙালি একত্রিত ও মিলিত হন শারদীয় দুর্গা পূজার আনন্দ-উৎসবে।
তাই এই উৎসব সার্বজনীন এবং সামাজিক উৎসব যা এদেশের মানুষের মধ্যে পারস্পরিক
সহমর্মিতা ও ঐক্য সৃষ্টিতে অনবদ্য ভূমিকা পালন করে। এই জন্যই আমাদের মাননীয়
বলে থাকেন,
ধর্ম যার যার , উৎসব সবার।
তিনি আরো বলেন দুর্গোৎসবের মূল মন্ত্র হ'লো অশুভ শক্তির বিনাশ এবং শুভ ও
সত্যের বিকাশ । শুভ ও অশুভ শক্তির চিরকালের দন্দ্বে শুভ শক্তির বিজয়ের গৌরব
ঘোষণা করে এই উৎসব। একই সাথে আমি দৃঢ়ভাবে বলতে চাই, মানবতাই ধর্মের বানী।
ধর্ম মানুষকে ন্যায় ও কল্যাণের পথে আহবান করে - অন্যায় অসত্য থেকে দূরে রাখে
, দেখায় মুক্তির পথ । তাই ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলার পাশাপাশি আমাদের
মানবতার কল্যাণে এগিয়ে আসতে হবে । সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে যা বাঙ্গালি জাতির চিরকালীন ঐতিহ্য , আমাদের
অসাম্প্রদায়িক চেতনা , পারস্পারিক ঐক্য, সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি পারে
বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে এবং বিশ্ব মানবতার জয় নিশ্চিত করতে
শারদীয় দুর্গ উৎসব সফল হোক । আমি এই কামনা করি ।
তনুশ্রী গোলদার বিশ্বাসের উপস্থাপনায় পূজা বিষয়ক আলোচনায় অংশ নেন সার্বজনীন
পূজা কমিটি জাপান'র সভাপতি শ্রী সুনীল রায় , সাধারন সম্পাদক রতন বর্মণ , সহ
সাধারন সম্পাদক অঞ্জন দাস, উপদেষ্টা শ্রী সুখেন ব্রহ্ম, বিশেষ অতিথি
ইয়োশিনারি কাতসুও , বিশেষ অতিথি, দুতাবাস কাউন্সেলর ডঃ জিয়াউল আবেদিন এবং
উপদেস্টা ডঃ কিশোর কান্তি বিশ্বাস ।
ডঃ জিয়াউল আবেদিন রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা প্রদত্ত শুভেচ্ছা বক্তব্য পাঠ করে
শোনান ।
আলোচনা পর্ব শেষ হলে শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ।পরিচালনায় ছিলেন ববিতা
পোদ্দার । প্রথমেই শিশুদের পর্ব ছিল । একঝাক শিশু এতে অংশ নিয়ে মন্ত্র পাঠ
, গল্প ,নাচ , গান , আবৃতি পরিবেশন করে ।
এরপর সৌখিন শিল্পীরা সংগীত পরিবেশন এবং সবশেষে উত্তরণ ভক্তিমূলক গান ও
কীর্তন পরিবেশন করে বরাবরের মতো ।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষ হলে শুরু হয় ঢাকের শব্দে ধুনচি ধুনট হাতে নৃত্যের
তালে তালে চলে নাচ। পরিশেষে আরতি, সিঁদুর খেলা, মিষ্টিমুখ ও আলিঙ্গনের মধ্য
দিয়ে শেষ হয় এবারের পূজার সকল আয়োজন ।
WARNING:
Any unauthorized use or reproduction of 'Community' content is strictly
prohibited and constitutes copyright infringement liable to legal
action.
[প্রথমপাতা] |
|