|
বঙ্গবন্ধু ও আমাদের পরিবার
@
@
@
মোহাম্মাদ নাহিদ
gএকজন মানুষ হিসাবে সমগ্র মানব জাতি নিয়েই আমি ভাবি।একজন বাঙালী হিসাবে যা
কিছু বাঙ্গালিদের সঙ্গে সম্পর্কিত তাই আমাকে গভীর ভাবে ভাবায়।এই নিরন্তর
সম্প্রিক্তির উৎস ভালবাসা, যে ভালবাসা আমার রাজনীতি এবং অস্তিত্বকে অর্থবহ
করে তুলে।ff
-বাঙালী জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান
ইখতিয়ার উদ্দিন মোহাম্মাদ বখতিয়ার খিলজির শাসন আমল থেকে বাংলার মানুষ
গনতন্ত্র ও স্বাধীনতার জন্যে কিভাবে আত্মদান করেছে তার সকল ঘটনাবলি এবং নয়
মাসের মুক্তিযুদ্ধ একটি যুগান্তকারী ঘটনা ।নানা প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে
বাংলাদেশ নামক ভূখণ্ডটি জন্ম নিয়েছে। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের পাকিস্থানের
দমন নীতি এদেশের শান্তি প্রিয় মানুষ সুদৃষ্টিতে নেয়নি।মজলুম জননেতা মুকুট
বিহীন সম্রাট মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাষা নী , সামসুল হক এবং শেখ
মুজিবুর রহমান তাদের প্রতিবাদ সুরূপ আওয়ামী মুসলিম লীগ গঠন করেন। পরবর্তী
কালে বঙ্গবন্ধুর বলিষ্ঠ নেত্রিত্তে তারা নতুন মানচিত্রের স্বপ্ন দেখে।প্রাথমিক
দাবি ছিল পূর্ব পাকিস্থানের স্বায়ত্ত শাসন। পরবর্তীতে নির্যাতন নিপীড়নের
মাত্রা সীমা অতিক্রম করলে স্বাধীনতার আন্দোলনে রুপ নেয়।নয় মাস
মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে পৃথিবীর ইতিহাসে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের জন্ম হয়।
দেশ রক্ষার ডাক দেন বঙ্গবন্ধু।সেই ৭ই মার্চের ডাকে সাড়া দিয়ে আমার দুই চাচা
আব্দুল গনি এবং আব্দুস সামাদ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে যোগদান করেন ।পৃথিবীর
ইতিহাসের অন্যতম বৃহৎ গন সমাবেশ। মাত্র ১৯ মিনিটের ভাষণে স্বাধীন বাংলাদেশ
গঠনে একটি চিত্র তুলে ধরেন বঙ্গবন্ধু । শুধু বাংলাদেশ নয় পৃথিবীর স্বাধী্নতা
কামী মানুষের এটাই ছিল সর্ব শ্রেষ্ঠ ভাষণ । বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে শহীদ
হয় ৩০ লক্ষ তাজা প্রান।এদের রক্তে বাংলার শ্যামল ভূমি পরিণত হয় রক্তাক্ত
উপত্যকায় ।জাতি একটি স্বাধীন দেশ পায়,লাল সবুজের পতাকা বাতাশে দোল খায়,
আজকের শিশু অবাক বিস্ময়ে তাকায়। সে জানে না এর ইতিহাস । সেই ইতিহাসের একজন
ক্ষুদে নায়ক আমার অগ্রজ শহীদ মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম। বৃহত্তর ময়মসিংহের
একটি জেলা টাঙ্গাইল। টাঙ্গাইল এর অবহেলিত থানা কালিহাতি।কালিহাতি থানার
পশ্চিম পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া যামুনা নদী। এই নদীর তীর বেঁয়ে আধুনিকতার ছোঁয়া
না লাগা একটি গ্রাম। বঙ্গবন্ধু সেতুর বড় রাস্তাটি এই গ্রামের উপর দিয়ে
উত্তর বঙ্গের ১৬ টি জেলায় পৌঁছালেও এর গুন গত পরিবর্তন হয়নি। কাঁদা মাটির
সাথে খেলা করা গ্রাম বাসীর নিত্য সঙ্গী ।আজ থেকে ৫৯ বছর আগে ১৯৫৬ সালের ৫ই
জুলাই এ গাঁয়ে জন্ম নেয় এক ফুটফুটে শিশুর। বাবা আব্দুল আজিজ মা নছিরন নেসার
স্নেহধন্নে বেড়ে উঠে শিশুটি ।শৈশবে মায়ের আঁচল , ঘাস ফড়িং এর পিছু ছুটা ছুটি
করে দুপুর গড়িয়ে বিকেল হয় তার।দাদা বাহাজ উদ্দিন আদর করে নাম রাখে নজরুল।
ছোট বেলা থেকে দৃঢ়চেতা, বুদ্ধিদিপ্ত এবং কৌতুহলি নজরুল ছিল অন্য দের চেয়ে
আলাদা। পড়াশোনার পাশাপাশি দুরন্তপনা , বঁড়শিতে মাছ ধরা, লাটায় ঘুড়ি উড়ানো
ছিল নিত্য সঙ্গী। বাড়ির পুকুরে ডুব সাঁতার হৈচৈ ও মা বাবার আদরে শৈশব পেরিয়ে
কৈশোরে পা দেয় নজরুল। ১৯৭১ সালের প্রথমার্ধে অষ্টম শ্রেণী থেকে নবম শ্রেণীতে
পদার্পণ করেছে পলশিয়া রানী দিনমনি উচ্চবিদ্যালয়ে। সহপাঠী মিনহাজ, নবাব আলি,
সালামদেরকে নিয়ে স্কুলে যাওয়া আসা। এদিকে শুরু হয়েছে দেশ জুড়ে স্বাধিকার
আন্দোলন। দেশ মাতৃকার হাহাকার তার কানে বাজে। রাজনৈতিক অস্থিরতা, হরতাল,
অসহযোগ আন্দোলন পশ্চিমা শাসক গোষ্ঠীর শোষণ নিপীড়ন তার অবচেতন মনে দাগ কাটে।
বই হাতে উদাসীন ভাবে পথ চলা, বই খাতা ছুড়ে ফেলা মার নিকট ছিল খানিকটা
বিরক্ত কর। ৭ই মার্চে বঙ্গবন্ধুর ভাষণের পর তার অভাবনীয় পরিবর্তন লক্ষ্য করা
যায়। এদিকে দুই চাচার সাথে রেসকোর্স ময়দানে না যেতে পারায় তার অনেক মন
খারাপ হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ শুনে ফেরত আসেন দুই চাচা। আসার
পর চাচাদের নিকট মিছিল মিটিং এর কথা শুনে আরও সক্রিয় হয়ে উঠেন। কৈশোর পেরিয়ে
পরিণত হয় তরুণে। ১৪-১৫ বছরে ভুলে যায় বই খাতা, পথ চলে মিছিলের খোঁজে।
বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণে উদ্বুদ্ধ হয়ে ১৯৭১ সালের ২০ শে মার্চ দুপুর ২টায়
এলাকার ছাত্র যুবকরা নজরুলদের বাড়ির বৈঠক খানায় জরুরি সভা করে। সর্ব
সম্মতিতে সেই সভার সভাপতিত্ব করেন নজরুলের বাবা আব্দুল আজিজ।
তিনি ছিলেন
ইউ,পি সদস্য। তার নেতৃতে এলাকার ছাত্র যুবকদের নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ৪৫
সদস্য বিশিষ্ট গোহালিয়া বাড়ী সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়। কমিটিতে সভাপতি
নিযুক্ত হন নজরুলের চাচাত চাচা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্সের ছাত্র
আব্দুর রশিদ এবং সাধারণ সম্পাদকনি যুক্ত হন গ্রামের ভাল ছাত্র হিসাবে খ্যাত
সাদত বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে অধ্যয়নরত শহিদুজ্জামান। ১৯৭১ সালের জুন মাসের কোন
এক শুক্রবার ছিল আমাদের ওখানে সাপ্তাহিক হাটবার। মা আদরের ছেলের জন্য
কুলিপিঠা বানিয়েছেন হটাৎ কে এক জন নজরুলের খোঁজ করে মা কৌতূহলী হন। কিছু
দিন যাবত অনিয়ম পথ চলা বড়দের সাথে ফিসফিসানি, স্বাধীন বাংলা বেতারে কান পেতে
থাকা, রাত করে ঘরে ফিরা ইত্যাদি। মা নাম ধরে ডেকে পড়ার ঘরে যান। বই খাতা
কলম সহ অন্যান্য জিনিষ ঠিক ঠাক শুধু আদরের নজরুল নেই। নজরুল সবার কাছে
আদরের কারণ মার প্রথম সন্তান এবং বংশের বড় ছেলে। মা বাড়ির সদর রাস্তা
পর্যন্ত আসেন, পাশের বাড়ির বন্ধুদের নিকট খোঁজ নিয়ে পাননা। এভাবে বিকেল
গড়িয়ে সন্ধ্যা হয়। উদ্বিগ্ন মা অপেক্ষা করতে থাকেন। গভীর রাতে সংবাদ পান
নজরুল মুক্তিযোদ্ধাদের কাফেলায় যোগ দিয়েছে। আপন চাচা আব্দুল গনি, আব্দুস
সামাদ, আবু তালেব গ্রামের আরও ১০ জন যুবক সহ মোট ৫২ জনের দল। এদিকে পিঠা
পুড়ে ছাই। যে ছেলেটি মায়ের শৈশব, কৈশোর মায়ের গলা ধরে পার করেছে, মায়ের এক
মুহূর্ত অনুপস্থিতি যে সহ্য করতে পারেনা তার কানে এখন যুদ্ধের দামামা। চাচা
আব্দুল গনি এর ভয়ে নৌকার পাটাতনের নীচে, কখনও মাছাইলের নিচে পালিয়ে নৌকা
যোগে ধলেশ্বরীর তীর বেঁয়ে ছুটে চলে যায় ভারতের মাইনকার চরের উদ্দেশে।
মাইনকার চর থেকে মেঘালয় তুরা পাহাড়ে ট্রেনিং সমাপ্ত করে মুক্তিযুদ্ধের ১১নং
সেক্টরে কোম্পানি কমান্ডার জয়নাল আবেদিনের অধীনে যোগ দেয় নজরুল। এখান থেকে
চাচারা আলাদা হয়ে পরেন। তাদের বিদায় মুহূর্তে বয়সে সর্বকনিষ্ঠ নজরুল আবেগে
আপ্লুত হয়ে পড়ে। মনে পড়ে মায়ের কথা চাচাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে উঠে কিন্তু
পরক্ষনেই সামলে নেয়। হাতিয়ার হাতে ছুটে চলে যুদ্ধ জয়ের নেশায়। কমান্ডার
জয়নাল আবেদিন এর নেতৃত্বে তাদের দলটি টাঙ্গাইল এর নাগরপুর থানার সুটাইন
নামক এলাকার উদ্দেশে রওনা হয়। মেঘালয় থেকে ফেরার পথে ধলেশ্বরীর তীর ঘেসে
তাদের নৌকা গন্তব্যে ছুটে চলে। নজরুল তাকিয়ে দেখে তার চির চেনা ছায়ার মত
গ্রামখানি। মাকে একবার দেখে যেতে ইচ্ছে করে কিন্তু না যুদ্ধ জয়ের কড়া
অনুশাসন তাকে মেনে চলতে হয়। সেপন করে যুদ্ধে জয়লাভ করে বীরের বেশে বাড়ী
ফিরবে, মাকে উপহার দিবে একটি স্বাধীন দেশ, স্বাধীন মানচিত্র, একটি ভূখণ্ড।
টাঙ্গাইল জেলার নাগরপুর তখনও পাকহানাদার মুক্ত হয়নি। নাগরপুর থানার গয়হাঁটা
ইউনিয়নের বন গ্রামে তাদের দলটি আস্থানা গড়ে। ২১শে অক্টোবর ১৯৭১ ইতিহাসে
দিনটি কিভাবে লেখা হবে আমার জানা নাই। কমান্ডার জয়নাল আবেদিনের বাড়ী
নাগরপুরে বলে তাকে দায়িত্ব দেন ক্যাম্প ইন চার্জ হুমাউন খালিদ। ২০শে
অক্টোবর কমান্ডার জয়নাল আবেদিনের নেতৃত্বে দলটি পাক হানাদারদের একটি
আস্থানায় আক্রমন চালায় সেখানে যুদ্ধে জয়লাভ করে। ২১ তারিখের যুদ্ধ সম্পর্কে
কমান্ডার জয়নাল আবেদিন বলেন e আমরা বন গ্রামেই অবস্থান করছিলাম। প্রথম
যুদ্ধে জয়লাভের পর মেজাজ ছিল ভাল। কেউ কেউ অস্ত্র পরিষ্কার করে , কেউ কেউ
গোসল করে খেতে বসছে। রাজাকারদের কাছ থেকে খবর পেয়ে গতকালের পরাজয়ের
প্রতিশোধ নিতে আমাদেরকে আক্রমন করতে ছুটে আসছে। খবর পেয়ে আমরা বিলের পশ্চিম
প্রান্তে যুদ্ধের জন্য অপেক্ষা করি। কিছুক্ষন পর পাক বাহিনী গয়হাটার
পশ্চিমের নদী পার হয়ে বিলের কাছাকাছি উপস্থিত হয়। পিছন দিক থেকে গ্রামের
লোকজন জয়বাংলা ধ্বনি দিতে থাকে। আমরা তাদের নিষেধ করি কেননা শত্রু পক্ষ
আমাদের অবস্থান জেনে যেতে পারে। এক ঘণ্টার বেশী সময় যুদ্ধ চলে। আমাদের
প্রতিটি যোদ্ধা জয়ের নেশায় যুদ্ধ করছিল। কিছুক্ষন নীরবতা। হানাদার বাহিনীর
কিছু সংখ্যক সৈন্য আস্তে আস্তে উত্তর দিকে চলে যায় সেটা আমরা বুজতে পারিনি।
কারণ বিলের পূর্বপ্রান্তে পাট ক্ষেত ও ঘর বাড়ি থাকায় হানাদারদের মুভমেন্ট
আমরা টের পাইনি। এটাই ছিল আমার ভুল। তারা সংখায় ছিল আমাদের থেকে বেশী।
কিছুক্ষন পর উত্তর দিক থেকে গুলি আসতে থাকে। দুরুত্ব ছিল খুবই কম। তাকিয়ে
দেখলাম আমরা তিন দিক থেকে অবরুদ্ধ শুধু দক্ষিন দিক আমাদে রখোলা। উপায়ান্তর
না দেখে পিছন দিকে সরে যেতে বাধ্য হই। আমাদের পিছনে ছিল পানি আর আমন ধান
ক্ষেত। আমরা কেউ কেউ আমন ধান খেতে অবস্থান নেই। কেউ কেউ নিরাপদ আশ্রয়ে চলে
যায়। তারপর কয়েক প্লাটুন পাক সেনা এসে বন গ্রামের ঘরবাড়ী আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে
দেয়। পুরো গ্রাম আগুনে জ্বলতে থাকে। হালাকু খানের বাগদাদ আক্রমনকেও হার
মানায় বন গ্রামের এই নারকীয় হত্যাযজ্ঞ। অতিকাছে ওত পেতে থাকা এক পাকবাহিনীর
গুলি এসে নজরুলের বাম পাঁজরে বিদ্ধ হয়। জয়বাংলা বলে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।
সহযোদ্ধা আব্দুর রশিদ তাকে কাঁধে করে পাশের বাড়িতে নিয়ে যায়। পানি খেতে চায়।
যুদ্ধ শেষ করতে পারলনা বলে আফসোস করে। মাকে দেখতে চায় এবং অধিক রক্তক্ষরণে
এক সময় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। নজরুলের তাজা রক্তে রঞ্জিত হয় বন গ্রামের
অচেনা উঠোন। এই যুদ্ধে নজরুল সহ আরও দুই জন সহ যোদ্ধা শহীদ হন। নজরুল ছিল
ফর্সা, টকটকে চেহারার ১৪/১৫ বছরের কিশোর। সে সাহসিকতার সাথে যুদ্ধ করে শহীদ
হয়।ffরক্ত ছুয়ে শপথ করে সহযোদ্ধারা বীর বেশে বাড়ী ফিরবে। অনেকে ফিরেও আসে।
শুধু ফিরে আসে না প্রিয় মুখ নজরুল। সহ যোদ্ধাদের কাছে যায় সবাই নিশ্চুপ। মা
বুঝতে পারেন না, আঁচলে মুখ মুছেন ছেলে আর আসে না। আসে নজরুলের গুলিবিদ্ধ
শার্ট, রক্ত মাখা প্যান্ট। সেগুলি ঢাকাস্থ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে।
নাগরপুর সাজানি ইউনিয়নে সুটাইন এ শহীদ বীর কনিষ্ঠ মুক্তিযোদ্ধা নজরুল
ইসলামকে সমাহিত করা হয়। ইতিহাসের অন্তরালে থেকে যায় এরকম হাজার ও নজরুল।
মৃত্যুর সংবাদ পাবার পর আমার মা শহীদ জননী নছিরন নেছা ৬ মাস পাগল হয়ে ছিলেন
কাউকে ইনি চিনতে পারেননি। ঢাকার ইস্কাটন গার্ডেন রোডে অবস্থিত হোলি ফ্যামিলি
রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এখনও মাঝেমাঝে রাতে ঘুম থেকে
নজরুল বলে কেঁদে উঠেন। মুক্তিযুদ্ধের ১১ নং সেক্টরে টাঙ্গাইল জেলাধীন
নাগরপুরে পাকিস্থানি হানাদার বাহিনীর সাথে সম্মুখ সমরে শহীদ হন।
মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে তার তালিকা নম্বর যথাক্রমে– মুক্তিবার্তা-০১১৮০২০১০৭,
জাতীয় তালিকা শহীদ-১৮, এফ/এফ-৮৩৬৯, মুক্তিযোদ্ধা ভারতীয় কল্যাণ ট্রাষ্ট--১৭৮০,
বাংলাদেশ গেজেট -২০৬৯। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে কনিষ্ঠ শহীদ
মুক্তিযোদ্ধাদের অন্যতম। টাঙ্গাইল জেলা শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্তম্ভে তার নাম
৮ নম্বরে রয়েছে। যেটি টাঙ্গাইল পুলিশ সুপার অফিসের সামনে অবস্থিত। এলাকায়
তার নামে e শহীদ নজরুল পাঠাগারf , e শহীদ নজরুল সড়কf এর নামকরণ করা হয়েছে।
বর্তমান সরকার বাংলাদেশে ১৪ টি শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ করার উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
যার প্রতিটি তৈরিতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১০ লক্ষ থেকে ২ কোটি টাকা।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী
এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রী, গনভবন, ঢাকা থেকে আমার পরিবারকে কয়েকটি চিঠি
দিয়েছিলেন তার স্বাক্ষরিত। সেই চিঠিতে তিনি লিখেছেন,-চিঠি নম্বর (৪৯)
gজনাব-/ আপনার পরিবারের মোহাম্মাদ নজরুল ইসলাম পিতা আব্দুল আজিজ মিয়া ,গ্রাম
গোহালিয়া বাড়ী, থানা কালিহাতি, জেলা টাঙ্গাইল। বাংলাদেশের স্বাধীনতা
সংগ্রামে যে ত্যাগ , তিতিক্ষা, সাহসিকতা ও দেশ প্রেমের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত
দেখিয়েছেন সেটা বৃথা যায়নি। তাদের রক্তের বিনিময়ে দেশ হয়েছে স্বাধীন। তাই
দেশ আজ তাদের জন্য গর্বিত। বাংলাদেশ সরকার, জনগনও আমার নিজের পক্ষ থেকে আমি
আপনাকে জানাচ্ছি আন্তরিক ধন্যবাদ এবং আপনার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি
জানাচ্ছি আমার আন্তরিক সমবেদনা ও সহানুভুতি। শুভেচ্ছা রইলো আপনাদের (সাক্ষর
শেখ মুজিব) শেখ মুজিবুর রহমান।h
বঙ্গবন্ধুর সাথে আমার পরিবারের মিল যেমন , গণতন্ত্র, শোষণ মুক্ত সমাজ,
সামাজিক ন্যায় বিচার ,জাতীয়তাবাদ , ধর্ম নিরপেক্ষতা অর্থাৎ সকল ধর্মের
মানুষের স্ব স্ব ধর্ম স্বাধীন ভাবে পালনের অধিকার, বেকারত্ব দূরীকরণ,
দারিদ্র দূরীকরণ, দারিদ্র বিমোচন ,গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিক রূপদান ,
অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষে তিনি ও তার পরিবার যেমন জীবন দিয়েছেন
তেমনি আমার ভাই স্বাধীন রাষ্ট্র সৃষ্টি তে জীবন উৎসর্গ করেছেন। পরিবার
হারানোর বেদনা মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা যেমন বুজেন তেমনি ছেলে
হারানোর বেদনা আমার পরিবার তেমন বুজে। ত্রিশ লক্ষ শহীদের আত্মত্যাগে অর্জিত
স্বাধীনতায় আজোও আমরা পুরোপুরি গর্বিত নই। সেদিন গর্ব বোধ করবো, যেদিন এদেশে
সকল যুদ্ধাপরাধীর বিচার হবে। শান্তি পাবে সন্তান হারা মায়ের মন ও লাখো
শহীদের বিদেহী আত্মা ।।।
@
WARNING:
Any unauthorized use
or reproduction of
'Community' content is
strictly prohibited
and constitutes
copyright infringement
liable to legal
action.
[প্রথমপাতা] |
@
|